Rebonding hair care করবেন কিভাবে? অনেক মেয়েরাই কোঁকড়া চুল পছন্দ করেন না। তাই পার্লারে গিয়ে তাদের কোঁকড়া চুলগুলোকে রিবন্ডিং করিয়ে সোজা বানিয়ে রাখেন। তবে চুল রিবন্ডিং করলেও চুল ছয় থেকে এক বছর চুল সোজা থাকে। আর রিবন্ডিং চুলের সুবিধা হচ্ছে খুব অল্পতেই দেখতে গোছানো এবং সুন্দর লাগে। কিন্তু চুল রিবন্ডিং করলেই কাজ শেষ হয়ে যায় না। রিবন্ডিং করা চুলের জন্য দরকার বাড়তি যত্ন।
মনে রাখবেন রিবন্ডিং করা হেয়ার কে একটু আলাদা ভাবে যত্ন নিতে হয় অন্য সময়ের তুলনায়। যাতে আপনার শখের রিবন্ডিং চুল গুলো স্ট্রেইট বা সোজা থাকে। তাহলে চলুন রিবন্ডিং চুলের জন্য বাড়তি যত্ন কিভাবে নেওয়া যায় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
চুল রিবন্ডিং করার পর দুই তিন দিন পর্যন্ত চুল ভেজানো যাবে না। কোন শ্যাম্পু বা প্যাক ব্যবহার করা যাবে না। এতে রিবন্ডিং করা চুলের ক্ষতি হবে।
চুল রিবন্ডিং করার দুই তিন দিন পর অবশ্যই হেয়ার ট্রিটমেন্ট করিয়ে নিতে হবে। তারপর থেকে প্রতিমাসে একবার করে হেয়ার ট্রিটমেন্ট করলেই চলবে। আর রিবন্ডিং চুলের জন্য অনেক বিউটিশিয়ানের মতে অ্যারোমা হেয়ার ট্রিটমেন্টটাই সবচাইতে ভালো কার্যকরী। এছাড়া অন্যান্য হেয়ার ট্রিটমেন্টগুলিও ভালো। আপনি আপনার সুবিধামত একটি হেয়ার ট্রিটমেন্ট করিয়ে নেবেন।
গোসলের সময় চুলে হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। আজকাল বাজারে রিবন্ডিং চুলের জন্য আলাদা করে ভালো মানের শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার পাওয়া যায়। চুল শ্যাম্পু করে তারপর কন্ডিশনার লাগাতে হবে।
দ্রুত জানতে পড়ুনঃ টাক মাথায় নতুন করে চুল গজানোর উপায়।
rebonding hair care এর সবচাইতে ভালো heir caring পদ্ধতি হলো চুলে হট অয়েল ম্যাসেজ করা। কারণ রিবন্ডিং চুলের জন্য অয়েল মেসেজ খুবই জরুরী। সপ্তাহে তিন দিন শ্যাম্পু করার এক ঘন্টা আগে অয়েল ম্যাসাজ করুন। এতে করে আপনার চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। এতে চুলের গোঁড়ায় ব্লাড সার্কুলেশন বাড়বে এবং হেয়ার গ্রোথ অব্যাহত থাকবে। যার ফলে আপনার চুলগুলো অনেক ময়েশ্চারাইজ থাকবে এবং চুল সহজে ড্যামেজ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে।
কারো চুল যদি ড্যামেজ হয়েও যায় তাহলে এভাবে হেয়ার অয়েলিং করার ফলে চুলের ড্যামেজটা অনেকটা রিপেয়ার হয়ে যাবে। তাহলে অবশ্যই সপ্তাহে তিনদিন চুলে হেয়ার অয়েল মেসেজ করতে হবে। আপনি যে কোন হেয়ার অয়েল ইউজ করতে পারেন। তবে ন্যাচারাল উপায়ে যে সমস্ত হেয়ার অয়েল গুলো তৈরি করা হয় সেগুলো ইউজ করতে পারলে ভালো রেজাল্ট পাওয়া যায় এবং সেটা হেয়ারের জন্য অনেক বেশি সেইফ।
কিভাবে ন্যাচারাল উপায়ে ঘরেই হেয়ার অয়েল তৈরি করতে হয় সে সম্পর্কে ইউটিউবে অসংখ্য ভিডিও আছে। আপনি একটু সার্চ করলেই নিয়ম গুলো জেনে নিতে পারবেন। এছাড়াও পরবর্তীতে এই ন্যাচারাল তেল তৈরি পদ্ধতি নিয়ে একটি আর্টিকেল পাবলিশ করা হবে। তবে আপনারা চাইলে শুধুমাত্র নারিকেল তেলকে অলিভ অয়েল ও ক্যাস্টর অয়েল এর সাথে মিশিয়ে গরম করে চুলে ভালোভাবে এপ্লাই করতে পারেন। তখন এই অয়েলটি রিবন্ডিং চুলের জন্য ভালো উপকার করে থাকে। আর বাজার থেকে রেডিমেট কিনে যদি কোন তেল ব্যবহার করেন তাহলে প্যারাবিন ও সালফেট ফ্রি যেন থাকে সেদিকে লক্ষ্য রেখে কিনবেন। কারণ এই সময় এই রিবন্ডিং চুলের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে সমস্ত সেইফ প্রোডাক্টগুলো রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করতে হবে। তাহলে চুলের ড্যামেজ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবেন।
আরও পড়ুনঃ মাথার পাতলা চুল ঘন করার উপায়।
আপনি অন্যভাবে যেমন নারিকেল তেলের সাথে আমলকি ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে মাথার তালুতে লাগিয়ে মেসেজ করুন। এছাড়া সপ্তাহে একবার করে ডাই হেয়ার মাস্ক ইউজ করবেন। যেটা আপনার চুলের জন্য ভালো, যেটা আপনার চুলের ড্যামেজকে রিপেয়ার করে তুলতে সক্ষম এমন অনেক হেয়ার মাস্ক কিভাবে ঘরে বসেই আপনি এপ্লাই করতে পারেন এ সম্পর্কে অনেক ভিডিও আপনি ইউটিউবে সার্চ করলে পেয়ে যাবেন। সেখান থেকে দেখে তা আপনি চুলে এপ্লাই করতে পারেন। তাহলে আশাকরি আপনারা ভালো রেজাল্ট পাবেন।
যাদের চুলে খুশকির সমস্যা রয়েছে তারা তাদের rebonding hair care করার সময় তাদের চুলে পেঁয়াজের রস ও লেবুর রস কোকোনাট অয়েল এর সাথে মিশিয়ে কিছুক্ষণ আপনার চুলে লাগিয়ে রাখতে পারেন। এভাবে চল্লিশ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা লাগিয়ে চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। এতে যাদের খুশকির সমস্যা রয়েছে তাদের খুশকি কমে যাবে।
আরও পড়ুনঃ চিরতরে খুশকি দূর করার উপায়।
অনেকের চুলের মধ্যে রিবন্ডিং করার পরও কিছুটা রাফনেস থাকে। তাদের চুলের এই রেফনেসটা দূর করার জন্য চুলে মধু ব্যবহার করতে পারেন। একটি পাত্রে চুলের ঘনত্ব বুঝে পানি নিয়ে তার সাথে মধু মিশিয়ে চুলে এপ্লাই করুন। কিছুক্ষণ রেখে চুল ধুয়ে নিলে দেখবেন যে আপনার চুলের রুক্ষতা বা রেফনেসটা থাকলে সেটা অনেক কমে গিয়েছে।
রিবন্ডিং চুলের কেয়ারে আরেকটি কাজ হলে অবশ্যই পনেরো দিন পরপর চুলে স্পা করতে হবে। আপনি চাইলে বিউটিপার্লারে না গিয়ে ঘরে বসেও চুলে নিজে নিজে বা অন্য কারো সাহায্য নিয়ে চুলের স্পা ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে ইউটিউবে সার্চ দিয়ে পদ্ধতিগুলো দেখে নিতে পারেন। আবার স্পা ক্রিম নিজেও বানিয়ে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। এই জন্য দুই টেবিল চামুচ দুধ ও দুই টেবিল চামুচ মধু ভালোভাবে মিক্স করে চুলে লাগাতে পারেন। এটা অন্তত বিশ মিনিট পর্যন্ত চুলে লাগিয়ে রাখলেই যথেষ্ট। তার পর চুল শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার লাগিয়ে নিবেন। কিন্তু চুলের গোড়ায় কন্ডিশনার লাগানো যাবেনা। এটাও স্পা ক্রিম হিসাবে ভাল কাজ করে। এছাড়া যে কোন হেয়ার স্পা ক্রিম আপনি ইউজ করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ চুল পড়ার কারণ ও তার প্রতিকার।
প্রতি দুই সপ্তাহ পরপর চুলের প্রোটিন ট্রিটমেন্ট করাতে হবে। কারণ প্রোটিন ট্রিটমেন্ট করলে চুল অনেকটা সফট, অনেকটা হেলদি ও সুন্দর থাকে। অনেক সময় চুল রিবন্ডিং করার ফলে চুল ড্যামেজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে এই ট্রিটমেন্টটি করানোর ফলে সেটা কমে যায়। আপনার রিবন্ডিং চুলের কেয়ারিং এর জন্য এই নিয়মগুলো ফলো করতে হবে।
চুল মসৃণ ও সোজা রাখার জন্য চুল রিবন্ডিং করার পর অন্তত এক মাস চুল পেঁচিয়ে বাঁধা যাবেনা। কারন রিবন্ডিং করার পর চুল এমনিতেই দুর্বল হয়ে থাকে। প্রতিদিন দুই তিনবার করে মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে মাথা আচড়াতে হবে। এতে চুল সোজা থাকবে ও চুল ভেঙ্গে যাবে না। তবে ভেঁজা চুলে কখনোই চুল আচঁড়ানো যাবেনা।
চুল রিবন্ডিং করার পর কিছুদিন অন্তত চুলে কোন প্রকার কালার বা হেনা ব্যবহার করা যাবে না। সেটাও আবার কমপক্ষে দুই মাস পর্যন্ত। আরেকটি কথা হলো রিবন্ডিং চুলে কখনো হেয়ার ড্রায়ার করে চুল শুকাতে যাবেন না। চেষ্টা করবেন ন্যাচারালি বা ফ্যানের বাতাসে চুল শুকাতে।
এভাবে নিয়মিত যত্ন বা পরিষ্কার পরিচর্যার মাধ্যমে রিবন্ডিং করা চুলের সৌন্দর্য স্থায়িত্ব দুটোই বৃদ্ধি পাবে। আর প্রপার একটি rebonding hair care রুটিন যদি আপনি নিয়মিত ফলো করেন তাহলে আপনার চুলগুলো অনেক বেশি সিল্কি, সুস্থ ও শাইনি দেখাবে।
বাইরে বের হলে ছাতা ব্যবহার করুন। চাইলে হিজাব ব্যবহার করতে পারেন। শ্যাম্পু করার পর দুই লিটার পানিতে কয়েক ফোঁটা ভিনেগার মিশিয়ে চুল ধুতে পারেন। এতে চুল মসৃণ হবে। চুলের আগা দুই মাস পর পর কাটুন। এছাড়া আপনার খাদ্যতালিকায় প্রতিদিন কিছু পুষ্টিকর খাবার রাখুন। নিয়মিত পর্যাপ্ত পানি পান করুন। যেন শরীরের ভেতর থেকেও চুল যথেষ্ট পুষ্টি পায়। মূলত এগুলোই ছিল সঠিক rebonding hair care পদ্ধতি।
আরও পড়ুনঃ মাত্র ৩০ দিনে চুল লম্বা ও ঘন করার গোপন টিপস।