টমেটো ফেসিয়াল কিভাবে করবেন। The Exclusive Tips of Tomato Facial At Home. টমেটোর এই ফেসিয়ালটি আপনি ঘরে বসে খুব সহজে ঝটপট করে বানিয়ে মুখে ব্যাবহার করতে পারবেন। এই ফেসিয়ালটি আপনার ত্বককে করে তুলবে আরও বেশি ফর্সা ও চকচকে উজ্জ্বল।
টমেটোতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন- এ, বি, সি এবং ভিটামিন- কে, আছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, বিটা ক্যারোটিন, উচ্চ মানের লাইকোপেন, ফলিক এসিড সহ গুরুত্বপূর্ণ অসংখ্য ভিটামিন। আপনার ত্বকের সুস্থতা, চেহারায় উজ্জ্বলতা প্রদানের পাশাপাশি টমেটো হার্টকে সুস্থ রাখে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এবং দ্রুত হজমে সাহায্য করে।
রূপচর্চায় টমেটো ফেসিয়াল অত্যন্ত ভাল কাজ করে। এছাড়া মুখের ব্রণ দূর করা, রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখা, কিডনি সুস্থ রাখা হল টমেটোর প্রধান বৈশিষ্ট্য। টমেটোতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিনস, মিনারেলস ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় এটি মানবদেহের রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
চলুন তাহলে জেনে নেই টমেটো ফেসিয়াল টিপস বা টমেটোর এই অসাধারণ ফেসিয়ালটি আপনি কিভাবে ঘরে তৈরি করে ব্যাবহার করবেন। টমেটোর এই ফেসিয়ালটির কার্যকারীতা সঠিক ভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য আপনাকে ফেসিয়ালটিকে তিনটি ভাগে ভাগ করে নিয়ে করতে হবে। যেমন-
1. ক্লিনজিং
2. স্ক্রাবিং এবং
3. ফেসপ্যাক
1. ক্লিনজিংঃ ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধির এই ক্লিনজারটি তৈরি করতে প্রথমেই প্রয়োজন পড়বে টমেটোর রস। আর ফেসিয়ালটি যেহেতু তিনটি ভাগে করতে হবে। তাই টমেটোর রস একটু বেশী করে বানিয়ে নিতে হবে। তাই প্রথমেই কয়েকটি পাকা টমেটোর থেকে সম্পূর্ণ রস বের করে ভালো করে ছেঁকে একটি পাত্রে নিয়ে নিন। তারপর এর মধ্য থেকে আলাদা একটি পাত্রে এক টেবিল চামুচ টমেটো রস নিয়ে নিন। তারপর এর সাথে মিক্স করুন এক টেবিল চামুচ কাঁচা দুধ এবং এক টেবিল চামুচ লেবুর রস। তারপর সবগুলো উপাদানকে ভাল করে মিশিয়ে নিন।
ব্যবহার প্রণালীঃ এখন একটি নরম কাপড় ভিজিয়ে বা তুলার সাহায্যে আপনার সারা মুখে ম্যাসেজ করে সার্কুলেশন করে লাগিয়ে নিন। এখানে যে তিনটি উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো ত্বকের গভীর থেকে ময়লা দূর করতে পারে সহজেই। পাশাপাশি ত্বককে অনেক ফর্সা করতে সাহায্য করে।
2. স্ক্রাবিংঃ প্রথম স্টেপ অর্থাৎ ক্লিনজিং শেষ করার পর পরই আপনাকে এটা করতে হবে। এই স্ক্রাবার তৈরি করার জন্য প্রথমে একটি পাত্রে দুই চামুচ চালের গুঁড়া নিয়ে নিন। তারপর এর মধ্যে এড করুন এক টেবিল চামুচ টমেটো পেস্ট ও এক টেবিল চামুচ কাঁচা দুধ। এখন সবগুলো উপাদান ভালো করে মিশিয়ে ফেলুন। খেয়াল রাখতে হবে যেন প্রত্যেকটি উপাদান ভালোভাবে মিশে যায়। ব্যাস এভাবেই তৈরী হয়ে গেল ফেস স্ক্রাবার।
ব্যাবহার প্রণালীঃ এখন এই স্ক্রাবটি আপনার আঙ্গুলে সামান্য করে করে নিয়ে আপনার সম্পূর্ণ মুখের মধ্যে সার্কুলেশন করে করে লাগাতে থাকুন। এভাবে একটানা এই মেসেজটি পাঁচ মিনিট ধরে করতে থাকুন। দুধ হল একটি আদর্শ খাবার। তেমনি ত্বকের জন্যও দুধ একটি আদর্শ উপাদান। তাই ত্বক উজ্জ্বল করতে কাঁচা দুধ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এইভাবে স্ক্রাব করে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। তারপর পরিষ্কার পানি দ্বারা আপনার মুখমণ্ডল ধুয়ে ফেলুন।
3. ফেসপ্যাকঃ সর্বশেষ এই ফেসপ্যাকটি তৈরি করার জন্য একটি পাত্রে এক টেবিল চামুচ বেসন, এক টেবিল চামুচ টমেটো পেস্ট ও এক টেবিল চামুচ টক দই নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে সুন্দর একটি পেস্ট বানিয়ে নিন। আমাদের ফেসপ্যাকটি এখন ত্বকে ব্যাবহারের জন্য সম্পূর্ণ তৈরি।
ব্যাবহার প্রণালীঃ এখন এই ফেসপ্যাকটি আপনার মুখে আঙ্গুল দিয়ে অথবা একটি ব্রাশের সাহায্যে ভালো করে লাগিয়ে নিন। টক দই আমাদের ত্বকের রং ফর্সা করে তুলতে সাহায্য করে এবং উজ্জ্বল করে। টক দই এ বিদ্যমান ল্যাকটিক অ্যাসিড আমাদের ত্বকের মধ্যের কালো দাগ দূর করে ত্বককে কোমল ও মসৃণ করতে সাহায্য করে।
এই ফেসপ্যাকটি আমাদের ত্বককে ফর্সা ও উজ্জ্বল করার পাশাপাশি ত্বক থেকে বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে। ফেসপ্যাকটি মুখে লাগিয়ে বিশ মিনিট রেখেদিন। তারপর পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
এভাবে টমেটো ফেসিয়াল করে এবার আপনি আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালেই দেখবেন আপনার মুখ আগের চেয়ে কত ফর্সা ও সুন্দর লাগছে। আপনি এই ফেসিয়ালটি মাত্র একবার করলেই পার্থক্যটা বুঝতে পারবেন। টমেটোর এই ফেসিয়ালটি আপনি এক টানা এক মাস সপ্তাহে তিন দিন করে আপনার মুখে এপ্লাই করুন। তারপর হতে সপ্তাহে মাত্র একদিন করে ব্যাবহার করলেই হবে।
আপনারা টমেটো ফেসিয়াল টি অবশ্যই বাসায় নিজে ট্রাই করে দেখুন। দেখবেন মাত্র একমাসে আপনার ময়লা কালো ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল সুন্দর হয়ে গেছে। তাই প্রিয়জনের সামনে নিজেকে আরও আকর্ষণীয় করতে টমেটোর এই ফেসিয়ালটি নিয়মিত করুন।