Verification: 604f510ca357bb64

রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায় কি ? How Ways to be fair overnight

রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায় কি ? এমন কি উপাদান বা টিপস রয়েছে যা ব্যবহার করা মাত্রই আপনার কালো ময়লা ত্বক ফর্সা হয়ে যাবে ? বিষয়টি পড়ে হয়তো অনেকেই অবাক হয়েছেন। আসলে রাতারাতি কোন কিছুই সুফল বয়ে আনে না। তবে এখানে রাতারাতি বলতে দ্রুত বা তাড়াতাড়ি বোঝানো হয়েছে।

আর এখানে যেহেতু কোন কেমিক্যাল এর ব্যবহার করা হয়নি। তাই এখানে দেখানো টিপসগুলো নিয়মিত অল্প কিছুদিন ব্যবহার করলেই আপনি স্কিনের মধ্যে খুব দ্রুত ভাল একটা ফলাফল ভোগ করতে পারবেন। চলুন তাহলে রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায় সমূহ জেনে নেই।

রাতারাতি ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায়ঃ

০১। বডি হোয়াইটেনিং স্ক্রাবঃ দ্রুত ফর্সা ত্বক পেতে এই মিশ্রণটি খুবই কার্যকরী। এজন্য প্রথমেই প্রয়োজন হবে চিনি। চিনি ত্বকের স্ক্রাবার হিসেবে ভালো কাজ করে। এছাড়া অতি কম সময়ে ত্বককে ফর্সা ও চকচকে করতে এর জুড়ি নেই। তাই প্রথমে একটি বাটিতে এক টেবিল চামুচ চিনি নিয়ে সেগুলোকে গুড়া করে মিহি পাউডার করে নিন। তারপর এর সাথে অ্যাড করুন এক টেবিল চামুচ মধু এক টেবিল চামুচ লেবুর রস।

এখন এই তিনটি উপাদান ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন। তারপর এই মিশ্রণটি আপনার মুখে ভালো করে লাগিয়ে নিন এবং মুখের মধ্যে অন্তত পাঁচ মিনিট ধরে ঘষতে থাকুন। আপনি বাহির থেকে এসে ফেসিয়ালের পরিবর্তে বা গোসলের আগেও এটি ব্যবহার করতে পারেন।

মিশ্রণটি এভাবে ত্বকে ঘষার ফলে ত্বক উত্তপ্ত হয়ে ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। ফলে ত্বকের ডেড সেলগুলো দ্রুত দূর হয়ে যাবে এবং সাথে সাথে ত্বক থেকে সমস্ত ধুলা ময়লাও দূর হয়ে যাবে। পারলে মিশ্রণটি দশ মিনিট পর্যন্ত আপনার মুখে লাগিয়ে রাখুন। তারপর পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

এটি এতটাই কার্যকরী যে প্রথমবার ব্যবহার করলেই এর রেজাল্ট আপনি দেখতে পাবেন। আর দ্রুত ফল পাওয়ার জন্য পুরো এক মাস ব্যবহার করুন। রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায় হিসেবে এই টিপসটি অবশ্যই একবার হলেও আপনার ত্বকে এপ্লাই করে দেখুন।

আরও পড়ুনঃ কালো থেকে ফর্সা হওয়ার উপায়

০২। বডি হোয়াইটেনিং প্যাকঃ এর জন্য সবার প্রথমে আপনাকে নিতে হবে কমলালেবুর খোসা। একটি কমলার খোসা সম্পূর্ণরূপে ছাড়িয়ে নিয়ে তার সাথে কয়েক ফোঁটা গোলাপজল মিশিয়ে ব্লেন্ডারে দিয়ে মিহি করে নিতে হবে। আপনি চাইলে কমলার খোসার পরিবর্তে অরেঞ্জ মিল্ক পাউডার অর্থাৎ কমলার খোসার পাউডারও ব্যবহার করতে পারেন। যা আপনি যে কোনো বড় কসমেটিক শপে পেয়ে যাবেন।

কমলালেবুর পেস্ট করা হয়ে গেলে আলাদা একটি বাটিতে তিন টেবিল চামুচ পেস্ট নিয়ে নিন। তারপর এর সাথে অ্যাড করুন দুই টেবিল চামুচ টক দই ও দুই টেবিল চামুচ মুলেঠি পাউডার বা পতঞ্জলি মুলেঠি পাউডার। এটি একটি আয়ুর্বেদিক উপাদান। এটি ত্বককে মসৃণ করে ও ত্বকের গ্লো বাড়ায়।

তারপর সব শেষ দুই তিন চামুচ কাঁচা দুধ যোগ করে সবগুলো উপাদান ভালো করে নেড়ে মিক্স করে ফেলুন। এমনভাবে  মিক্স করুন যাতে মিশ্রণটিতে একটা ক্রিমি ভাব চলে আসে। এখন এই মিশ্রণটি আপনার ত্বকে ভালভাবে লাগিয়ে নিন এবং বিশ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

কমলালেবুর খোসায় ত্বকের কালচে ভাব দূর করার উপাদান রয়েছে। আর টক দইয়ে ল্যাকটিক এসিড থাকে। যা ত্বকের কালচে ভাব ও রোদে পোড়া দাগ কে দ্রুত দূর করতে সাহায্য করে ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে। আর মুলেঠি পাউডার ত্বকের রঙ ফর্সা করতে খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। এটি যে কোন কালচে হওয়া ত্বককে দ্রুত উজ্জ্বল করে তোলে।

বিশ মিনিট পর হালকা পানি দিয়ে ভিজিয়ে ভিজিয়ে ঘষে ধুয়ে ফেলুন। রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায় হিসাবে আপনি এই মিস্রন বা প্যাকটি সপ্তাহে তিনবার করে এক মাস ব্যবহার করলে দেখবেন দ্রুত আপনার ত্বক উজ্জল ও ফর্সা হয়ে গেছে।

০৩। মিল্ক হোয়াইটেনিং স্কিনঃ আমরা সবাই চাই আমাদের ত্বক যেন দুধের মতো ফর্সা আর উজ্জ্বল হোক। তার জন্য আমরা বাজার থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্কিন হোয়াইটেনিং প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকি। এগুলো ব্যবহারের ফলে দ্রুত ফলাফল পাওয়া গেলেও ত্বকের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।

কারণ এই সমস্ত ক্রিমে প্রচুর পরিমাণে কেমিক্যাল ব্যাবহার করা হয় যা পরবর্তীতে ত্বকের নানা সমস্যার সৃষ্টি করে । তাই রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায় হিসাবে দ্রুত দুধের মতো ফর্সা ও সুন্দর ত্বক পাবার জন্য প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করাই উত্তম। কারণ এতে কোনো সাইড ইফেক্ট থাকেনা। নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়।

সবার প্রথমে একটি পাত্রে দুই টেবিল চামুচ আটা নিয়ে নিন। তারপর এর সাথে অ্যাড করুন দুই টেবিল চামুচ মিল্ক পাউডার, দুই টেবিল চামুচ টক দই আর এক টেবিল চামুচ লেবুর রস। এখন সবগুলো উপাদান একটু সময় নিয়ে ভালো করে মিক্স করে নিন। দেখবেন মিশ্রণটির মধ্যে চমৎকার একটা কৃমি ভাব চলে এসেছে।

এখন এই মিশ্রণটি আপনার মুখে ভালো করে ফেসিয়াল ম্যাসেজ এর মতো করে লাগিয়ে নিন। চেহারা থেকে বয়সের ছাপ দূর করার জন্য খুব সুন্দর একটি রিমেডি হল এই মিশ্রণটি। মিশ্রণটি আপনার মুখে শুকিয়ে যাবার পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায় এই প্যাকটি রাতে শোবার আগে আপনার মুখে এপ্লাই করে নিন। আর সকালে উঠেই দেখতে পাবেন মুখ এত ফর্সা হয়ে গেছে যে আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন। এর থেকে আরো ভালো রেজাল্ট পেতে হলে আপনি এটি সপ্তাহে তিনবার করে ব্যবহার করুন। তাহলেই খুব দ্রুত আপনার মুখের ত্বক ফর্সা ও সুন্দর হয়ে যাবে।

 ০৪। চন্দন ও শসার মিশ্রনঃ সেই প্রাচীনকাল থেকে রূপচর্চায় চন্দনের গুঁড়া ব্যবহার হয়ে আসছে। কালো ত্বককে ফর্সা ও উজ্জ্বল করতে চন্দনের গুঁড়ার জুড়ি নেই। এছাড়া ত্বক থেকে ময়লা কালো দাগ দূর করতেও শসা খুব কার্যকরী একটি উপাদান। তাই রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায় হিসাবে দ্রুত ফর্সা ত্বক পাওয়ার জন্য এই উপাদানগুলো খুব ভালো কাজ করে।

এজন্য প্রথমে একটি পাত্রে এক টেবিল চামুচ চন্দন গুঁড়া ও শসার গুঁড়া দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। হাতের কাছে শসার গুঁড়া না পেলে শসাকে থেতলিএ রস করে নিলেও হবে। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এটি খুবই উপকারী। আর ত্বক যদি শুষ্ক হয় তাহলে মিশ্রণটির মধ্যে এক চামুচ টমেটো রস দিয়ে দিবেন।

মিশ্রণটি ব্যবহারের আগে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন এবং মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে দশ মিনিট রেখে মুখ পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে এই মিশ্রণটি আপনার ত্বকে এপ্লাই করুন। তাহলেই দেখবেন একদম রাতারাতি আপনার ত্বক অনেক ফর্সা হয়ে গেছে।

০৫। লেবু, চালের গুঁড়ো হলুদের মিশ্রণঃ আপনারা গোসলের আগে অথবা রাতে শোয়ার আগে ধৈর্য ধরে এই মিশ্রণটি একবারের জন্য হলেও ত্বকে ব্যবহার করে দেখুন। আপনার ত্বকের উপর থেকে কালো দাগ সরে গিয়ে ত্বক কতটা দাগহীন আর সুন্দর হয়ে গেছে।

রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায় হিসাবে দ্রুত আপনার ত্বক ফর্সা করতে এই মিশ্রণটি ব্যবহার করে দেখুন। ত্বক থেকে ব্রণের দাগ, নাকের দুই পাশে কালো দাগ সহ সব ধরনের দাগ দূর হয়ে গেছে। মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরাও এটা ব্যবহারে উপকার পাবেন।

যেহেতু এটাতে কোন কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়নি তাই এটা ব্যবহারে কোন সাইড ইফেক্ট নেই এবং শতভাগ প্রাকৃতিক। এটি হতে পারে আপনার জন্য রাতারাতি ফর্সা হওয়ার সহজ উপায়। চলুন তাহলে জেনে নেই কিভাবে রাতারাতি ফর্সা হওয়ার এই মিশ্রণটি তৈরি করবেন।

প্রস্তুত প্রণালীঃ মিশ্রণটি তৈরীর জন্য সবার প্রথমে একটি লেবু নিয়ে নিতে হবে। তারপর লেবু হতে গিটার এর সাহায্যে এর সম্পূর্ণ খোসা গ্রেট করে নিতে হবে। এখন এই গ্রেট করা লেবুর খোসা গুলো একটি পরিষ্কার পাত্রে নিয়ে নিন। তারপর এর সাথে দুই চামচ চালের গুঁড়া এবং আধা চামুচ হলুদ এর গুড়া মিশান।

তারপর অ্যাড করুন এক চামচ ময়দা বা বেসন। তবে এখানে ময়দা ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়া যায়। আরও অ্যাড করুন দুই টেবিল চামুচ কাঁচা দুধ। সবশেষে অ্যাড করুন অর্ধেকটা লেবুর রস ও ৪/৫ চামুচ গোলাপজল। এখন সবগুলো উপাদানকে ভাল করে মিশিয়ে নিন।

ভালো করে মিক্স করা হয়ে গেলে আইসকিউব ট্রেতে ঢেলে উপাদানটি আইস বানিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই আইসকিউবটি মুখের ত্বকে ব্যবহার করতে হবে। ২/৩ ঘন্টা ফ্রিজে রাখলেই হবে।

ব্যবহার প্রণালীঃ এখন ট্রে থেকে একটি করে আইসকিউব বের করে গোসলের আগে অথবা শোয়ার আগে ধীরে ধীরে আপনার মুখের সমস্ত ত্বকে ফেসিয়ালের ন্যায় মেসেজ করে লাগাতে থাকুন। চাইলে এটি আপনার হাত-পা, গলা ও ঘাড়েও ব্যবহার করতে পারেন। কেননা এটি অসম্ভব কার্যকরী একটি রিমেডি যা রাতারাতি আপনার ত্বককে ফর্সা বানাতে সাহায্য করবে।

এভাবে ম্যাসেজ করে লাগিয়ে পনেরো মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর পনেরো মিনিট শেষে কিছুটা শুকিয়ে আসলে মিশ্রণটির উপর পুনরায় ধীরে ধীরে আঙ্গুলদিয়ে মেসেজ করে ফেসিয়ালটি তুলে ফেলুন। তারপর নরমাল পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আপনি চাইলে এটি ব্যাবহারের পরে ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে পারেন।

এরপর আপনার ত্বকের দিকে লক্ষ্য করলে দেখবেন ত্বক কতটা ফর্সা আর উজ্জ্বল হয়ে গেছে। আপনার ত্বকের জৌলুস বাড়াতে এই মিস্রনের কোন জুড়ি নেই। তাই রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায় হিসাবে এই মিশ্রণটি একবার নিজে নিজে ট্রাই করে দেখুন।

০৬। বিশেষ ফেসপ্যাকঃ এই ফেসপ্যাকটি যদি আপনি মাত্র দুইবার আপনার ফেইসে এপ্লাই করেন তাহলে আপনি রাতারাতি ফর্সা হয়ে যাবেন। এছাড়া সাথে সাথে আপনি আরও বাড়তি কিছু উপকারিতাও ভোগ করতে পারবেন এই বিশেষ ফেসপ্যাকটি ব্যবহারে। যেমন- আপনার স্কিন আগের চেয়ে কয়েক শেড উজ্জ্বল হয়ে যাবে, ব্রণ থাকলে কমে যাবে এবং ত্বক কোমল মসৃণ ও মোলায়েম হয়ে যাবে।

এছাড়া আরো অনেকগুলো উপকারিতা আপনি নিজেই লক্ষ্য করতে পারবেন । শুধুমাত্র কয়েকবার ব্যবহার করলে আপনি নিজেই এর ফলাফল বুঝতে পারবেন। তাহলে এই রিমেডিটি কিভাবে তৈরি করবেন চলুন জেনে নেই।

প্রস্তুত প্রণালীঃ প্রথমে একটি পরিষ্কার বাটি নিয়ে তার মধ্যে এক টেবিল চামুচ সাদা টুথপেস্ট নিন। তারপর এর সাথে অ্যাড করুন এক টেবিল চামুচ কফি পাউডার। এখন এর সাথে দুই টেবিল চামুচ লেবুর রস মিশিয়ে দিন। তারপর সবগুলো উপাদান ভালো করে মিক্স করে নিন। ব্যাস এভাবেই বিশেষ ফেসপ্যাকটি তৈরি হয়ে গেল। প্যাকটি লক্ষ্য করলে দেখবেন চমৎকার একটি বাদামি বর্ণ ধারণ করেছে।

ব্যবহার প্রণালীঃ এখন একটি ব্রাশ বা আংগুল দিয়ে আপনার ত্বকে ফেসপ্যাকটি ভালো করে লাগিয়ে নিন এবং ত্বকে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর পরিস্কার পানি দ্বারা ত্বক ধুয়ে ফেলুন। এভাবে আপনি এই ফেসপ্যাকটি সপ্তাহে অন্তত দুই দিন বা তিন দিন ব্যবহার করুন। তাহলে দেখবেন একদম রাতারাতি আপনার ত্বক ফর্সা হয়ে গেছে।

আপনার ত্বক একদম ভেতর থেকে ফর্সা হওয়ার উপায় হিসাবে উপরে বর্ণিত ০৬ টি টিপস এর সবগুলই কার্যকরী। আপনি যদি এগুলোর যে কোনো একটি টিপস নিয়মিত ফলো করেন তাহলে আপনি একদম রাতারাতি ফর্সা হয়ে যাবেন। মূলত এগুলোই হল একদম রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায়।

Leave a Comment

error: Content is protected !!