রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা সমুহ আমাদের সবারই জানা দরকার। তবে রসুন হল প্রধানত পিয়াজ জাতীয় একটি ঝাঁঝাল মসলা জাতীয় খাদ্য বা সব্জি। আমাদের প্রতিদিনের রান্নায় মসলা ও আমাদের রসনা তৃপ্তিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে এই রসুন। তবে রসুন শুধু রান্নায় স্বাদই বাড়ায় না। বরং রসুন হল রান্নার একটি অপরিহার্য উপাদান। যেটা ছাড়া রান্না করা অসম্ভব। রান্নার পাশাপাশি রসুন শরীর স্বাস্থ্যও ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের আচার ও মুখরোচক খাবার তৈরি করতে রসুন ব্যবহার হয়।
উইকিপিডিয়া ঘেঁটে জানা যায় যে, প্রতি বছর ১৯ এপ্রিল বিশ্বজুড়ে ‘গার্লিক ডে’ বা রসুন দিবস পালিত হয়। চাইনিজরা তাদের খাবারে রসুন এতটাই বেশি ব্যবহার করেন যে, যার কারণে সেখানে বিশ্বের ৬৬% রসুন উৎপন্ন হয়। আবার ১ম বিশ্ব যুদ্ধের সময় আহত সৈনিকদের গ্যাংগ্রিনের চিকিৎসায় যখন সালফারের মজুদ কমে গেছিল তখন বিকল্প হিসাবে এই রসুন ব্যবহার করা হত। ইউরোপের দেশগুলোতে ‘হোয়াইট ম্যাজিক’ এর নাকি মূল মাধ্যমই হচ্ছে রসুন। এমনকি এটাও শোনা যায় যে, এই রসুন দিয়ে নাকি ইউরোপিয়ানরা ভ্যাম্পায়ারদের মোকাবিলা করেন। ভ্যাম্পায়ারদের মোকাবিলা করতে তারা রসুনের মালা বা রসুন ঘরের সামনে ঝুলিয়ে রাখত। ফলে ভ্যাম্পায়াররা নাকি ভয়ে আসতে পারে না বলে বিশ্বাস করত। তাই শতকের পর শতক ধরে রসুন নিয়ে এমনই সব কল্প কাহিনি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সারা বিশ্বে।
কথায় আছে রসুনকে গরিব মানুষের পেনিসিলিন বলা হয়। কারণ এর রয়েছে নানাবিধ ঔষুধি গুণ ও ক্ষমতা। জানা গেছে যে, প্রায় পাঁচ হাজার বছর ধরে এই সমস্ত সকল কাজে রসুন ব্যবহার হয়ে আসছে। বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থায় রসুনকে ভেষজ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধুমাত্র এক কোয়া রসুন মানবদেহে একদম ম্যাজিকের মতো কাজ করে। সুতরাং রসুনের উপকারিতা বা এর কার্যকারিতা এতটাই যে আপনি জানলে চমকে উঠবেন।
যেমন- ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করা, হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো, হাই ব্লাড প্রেসার ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখে রসুন। এছাড়া প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে রসুন কাজ করে এবং আপনার যৌন শক্তিকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে এই রসুন। এরকম অসংখ্য রসুনের উপকারিতা রয়েছে রসুনের মধ্যে। রসুনের বৈজ্ঞানিক নাম হল অ্যালিয়াম স্যাটিভাম (Allium sativum)। রসুনের পুষ্টিগুণের মধ্যে রয়েছে আমিষ, প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম এবং সামান্য ভিটামিন- সি। নিচে রসুনের উপকারিতা সমূহ ধাপে ধাপে বর্ণনা করা হল।
০১। প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিকঃ রসুন প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। রসুনে ১৭ মাত্রার অ্যামিনো এসিড রয়েছে। এই অ্যামিনো এসিড শরীরের ভিতরের অঙ্গ প্রতঙ্গগুলোকে কাজ কর্ম করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, খালি পেটে রসুন চিবিয়ে খেলে তা পেটে গিয়ে শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক এর মত কাজ করে। তাই সকালে নাস্তার পূর্বে কাঁচা রসুন খেলে উপকারিতা পাওয়া যায় ভাল। খালি পেটে রসুন খাওয়ার ফলে হজমে সহায়তা করে ও পাকস্থলীতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া সমূহ মরে যায়। ফলে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে শরীর রক্ষা পায়।
০২। ব্লাড প্রেশার বা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ প্রেশার বলতে আমরা হাইপ্রেশার বা হাইপারটেনশনকেই বুঝি। অসংখ্য মানুষ যারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগেন তারা এটা প্রমাণ পেয়েছেন যে, তাদের রসুন খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কমে গেছে ও তাদের শরীরে অনেক পরিবর্তন তারা দেখতে পেয়েছেন। রসুনকে হাই ব্লাডপ্রেসারের উত্তম ঔষধ হিসেবে ধরা হয়। তাই প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুই-তিন কোয়া রসুন চিবিয়ে বা গিলে খেতে পারেন।
তবে হাই ব্লাডপ্রেসার রোগটি দেখা দিলে পরে শুধু রসুনই খেতে হবে তা কিন্তু নয়। অর্থাৎ রোগটি প্রবল আকারে দেখা দেওয়ার পর রসুন খাওয়া শুরু করলে হাই ব্লাড প্রেসার দ্রুত কমে যাবে তা কিন্তু না। আপনাকে এর জন্য সঠিক নিয়মে ঔষধ খেতে হবে ব্লাড প্রেশারের অস্বাভাবিক অবস্থা থেকে নিয়ন্ত্রণে আসার জন্য। এর পাশাপাশি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে রসুন খেয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে রসুন দুই তিন কোয়া করে খেতে পারেন। আর হাই ব্লাডপ্রেসার ভালভাবে আয়ত্তে আসার পর কেবলমাত্র রসুন খেয়ে এটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
আরও পড়ুনঃ ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আপেল খাওয়ার উপকারিতা।
০৩। শরীরকে ডিটক্স করেঃ অন্যান্য ঔষধের তুলনায় রসুন শরীরকে ডিটক্স করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া রসুন ডায়াবেটিস ও ক্যান্সারের বিরুদ্ধে অনেক প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। দিন দিন পুরুষ ও মহিলাদের ক্যান্সার ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করছে। তাই বিভিন্ন ভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, রসুন ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধিকে প্রতিহত করে এবং নিয়মিত রসুন খেলে দেহে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়।
রসুন ঠোঁট, মুখ, পরিপাকতন্ত্র, স্তন, ফুসফুস, কোলন ও জরায়ুমুখ প্রভৃতি ক্যান্সার নিরাময়ে বিশেষ ভুমিকা পালন করে। কারণ রসুন ক্যান্সার কোষের বিভাজন কে নিয়ন্ত্রন করতে পারে। এছাড়াও রসুনে শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যালস গুলোকে ধ্বংস করে দেয়।
০৪। যক্ষ্মা নিরাময় ও শ্বসনতন্ত্র সুস্থ রাখেঃ রসুন যক্ষা নিরাময়, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি, ফুসফুসের সমস্যা, শ্বাস কষ্ট, কাশি ইত্যাদি প্রতিরোধ করে। রসুন শ্বাসনালীর মিউকাসকে বের করে দেয় ও এ্যাজমা রোগীদের উপশম দেয়। রসুনের মধ্যে রোগ উপশমকারী উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। বিশেষ করে যক্ষা রোগীর ক্ষেত্রে রসুনের রস পানির সাথে মিশিয়ে দিনে তিন বার করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
০৫। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ প্রতিদিন নাস্তার সাথে যদি আপনি এক কোয়া করে রসুন খেতে পারেন তাহলে আপনার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি ঋতু পরিবর্তনের ফলে সাধারণত যে সমস্ত স্বাস্থ্যগত সমস্যা হয়ে থাকে যেমন সর্দি, কাশি, জ্বর ইত্যাদি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
০৬। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ ও হৃদপিন্ডের সুস্থতাঃ রসুন শরীরে কোলেস্টেরল লেভেল কমাতে এবং হৃদপিন্ডর সুস্থতায় রসুনের উপকারিতা অনেক। আপনার LDL (Low Density Lipoprotein) কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে রসুন রক্তের LDL (Low Density Lipoprotein) কোলেস্টেরল কমাতে খুবই সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। এ কারণে হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কম থাকে। তাই হার্টের জন্য রসুন অনেক উপকারী। এজন্য প্রতিদিন দুই কোয়া করে খালি পেটে রসুন চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন। রসুন LDL (Low Density Lipoprotein) ও Triglycerides কমাতে সাহায্য করে। আর HDL (High Density Lipoprotein) বাড়াতে সাহায্য করে।
চিকিৎসকদের মতে রসুন লিভারের কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয় ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করে ও শরীর থেকে বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। এছাড়া রসুনের মধ্যে সালফার ও মনোসালফার বায়োএক্টিভ মিশ্রণ থাকে যা হৃদরোগকে প্রতিরোধ করতে পারে। বর্তমানে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে, রসুন অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, মায়োকার্ডিয়ামের দুর্বলতা ইত্যাদি রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া রসুন কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
০৭। ব্রণের সমস্যায়ঃ রসুন এর মধ্যে থাকা বিশেষ উপাদান মুখের ত্বকের ব্রণ দূর করতে অনেক সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এছাড়া অনেকের শরীরে আঁচিল হতে দেখা যায়। তখন রসুনের রস সেই আঁচিল দূর করতে সাহায্য করে।
০৮। কৃমি নিরাময়েঃ রসুন কৃমি নাশক। নিয়মিত কাঁচা রসুন চিবিয়ে খেলে তা পেটের মধ্যে থাকা সমস্ত কৃমিকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে। ফলে কৃমির যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
০৯। রক্ত পরিষ্কার করতেঃ রসুন যেহেতু রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাই রক্তের মধ্যে থাকা দূষিত পদার্থ সমূহ পরিষ্কার করতে প্রত্যেকদিন সকালে দুই কোয়া রসুন ও এক গ্লাস কুসুম গরম পানি সেবন করতে হবে। সাথে সাথে দিনে পরিমিত আকারে পানি পান করতে হবে। তাহলে রক্ত পরিষ্কার হয়ে যাবে ও আপনার ত্বক ভালো থাকবে।
এছাড়া রসুন ঠান্ডা ও জ্বরের মহৌষধ হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত কাঁচা রসুন চিবিয়ে খেলে ঠান্ডা লাগা ও সর্দি জ্বরের থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এছাড়া সিদ্ধ করে ও চায়ের সাথেও মিশিয়ে রসুন খেতে পারেন। যদি রসুন কাঁচা খেতে অসুবিধা হয় তাহলে এর সাথে সামান্য আদা ও মধু মিশিয়েও খেতে পারেন।
১০। কাটা স্থান সরিয়ে তুলতেঃ শরীরে কোথাও আঘাতে বা কোন কিছু ঢুকে কেটে গেলে তা বের করে সেই আক্রান্ত স্থানে রসুনের রস লাগিয়ে দিলে দ্রুত উপশম পাওয়া যায়।
১১। চোখ ও দাঁতের যত্নেঃ রসুন চোখের ছানি পড়ার হাত থেকে চোখকে রক্ষা করে ও দাঁতের ব্যাথা সারাতে অনেক সাহায্য করে থাকে। রসুন থেঁত করে দাঁতের গোঁড়ায় লাগিয়ে হালকা ভাবে ম্যাসেজ করলে উপকার পাওয়া যায়। আর হঠাৎ করে যদি মাড়ি ফুলে যায় কিংবা দাঁতে ব্যথা শুরু করে তাহলে এক কোয়া রসুন চিবিয়ে আক্রান্ত দাঁতের গোঁড়ায় লাগিয়ে রাখুন। তাহলে লাগানোর আধাঘন্টা পর থেকে ব্যথা ও যন্ত্রণা কমতে শুরু করবে। এছাড়া রসুনে থাকা ক্যালসিয়াম দাঁত মজবুত করে ও হাড়ের বিভিন্ন রোগ সারাতে সাহায্য করে।
১২। ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করেঃ সুগার রোগ হল একগুচ্ছ রোগের সমাহার। এই রোগ হলে রক্তে গুলুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। সাধারণত শরীরে ইনসুলিনের মাত্রার তারতম্যের কারণে এই রোগ হয়ে থাকে। বিজ্ঞানীদের মতে রসুনের মধ্যে অ্যালিসিন নামক সালফারযুক্ত জৈব যৌগ উপাদান থাকে যা ইনসুলিনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। যার ফলে সুগার খুব সহজে কমে যায়। এই জন্য প্রত্যেকদিন সকালে খালি পেটে দুই-তিন কোয়া রসুন চিবিয়ে খেতে হবে। তা যদি না পারেন তাহলে থেঁত করে পানির সাথে গিলেও খেতে পারেন।
১৩। যৌনশক্তি বৃদ্ধিতেঃ রসুনের উপকারিতা গুলোর মধ্যে অন্যতম হল যৌনশক্তি বৃদ্ধি। পুরুষের যৌন অক্ষমতার ক্ষেত্রে রসুন ভালো কাজ দিয়ে থাকে। যৌন আকাঙ্ক্ষা ফিরিয়ে আনার জন্য এই রসুনের ব্যবহার খুবই কার্যকরী। কোন কারণে বা কোন দুর্ঘটনার কারনে কিংবা বয়সের জন্য কারও যৌন আকাঙ্খা কমে গেলে রসুন তা ফিরিয়ে পেতে সাহায্য করবে। রসুন দেহে টেস্টেস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। যা মেন্স হরমোন নামে পরিচিত।
সাধারণত পুরুষের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, মাত্রাতিরিক্ত ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন, অতিরিক্ত ফাস্টফুড বা ফ্যাট জাতীয় খাবার গ্রহণ, ওজন বৃদ্ধি ও শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে দিন দিন স্বাস্থ্যকর শুক্রাণুর পরিমাণ কমে যেতে থাকে। তাই হেলদি শুক্রাণু তৈরিতে রসুনের জুড়ি নেই। এইজন্য প্রত্যেকদিন সকালে খালিপেটে ২-৩ কোয়া রসুন মধুর সাথে মিশিয়ে হালকা গরম পানিতে খেতে হবে। ফলে যৌন অক্ষমতা দূর হয়ে আপনার যৌন শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
আরও পড়ুনঃ উজন কমানোর উপায়।
১৪। আর্টিকেরিয়া বা আমবাত নিয়ন্ত্রণঃ মানব দেহে আমবাত, রিউমেটিক আর্থ্রাইটিস বা গাঁটে ব্যথা রোগের জন্য রসুনের উপকারিতা অনেক কার্যকরী। যদি আপনার গাঁটে ব্যথা, সকালে আপনার হাতে পায়ের আঙ্গুলে আরষ্ঠ ভাব থাকলে ঐ রোগ সমূহের অন্যান্য ঔষধের সাথে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুই থেকে চার কোয়া রসুন খাওয়ার অভ্যাস করুন। অথবা ব্যথার স্থানে রসুনের তেল মালিশ করলেও উপকার পাওয়া যায়।
এতক্ষণ আমরা রসুনের উপকারিতা সম্পর্কে অনেকগুলো টিপস জানলাম। এগুলো ছাড়াও রসুনের আরও অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। আশাকরি এই টিপসগুলো আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। তবে রসুন খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি এর রয়েছে নানাবিধ অপকারিতাও। তাহলে চলুন জেনে নেই রসুন খাওয়ার অপকারিতা সমূহ কি কি।
- রসুনের মধ্যে অ্যালিসিন নামক সালফারযুক্ত জৈব যৌগ উপাদান রয়েছে। যার কারণে মাত্রাতিরিক্ত রসুন খাওয়া শুরু করলে যকৃতে বিষক্রিয়া ঘটার সম্ভাবনা থাকে।
- নিয়মিত খালি পেটে রসুন খাওয়ার ফলে হঠাৎ ডাইরিয়া দেখা দিতে পারে। কারণ রসুনে থাকা সালফার পেটে গ্যাস তৈরি করতে পারে।
- ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক প্রকাশিত তথ্য মতে, খালি পেটে কাঁচা রসুন খেলে বুক জ্বলা কিংবা বমি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
- রসুনে থাকা সালফার থাকার কারণে রসুন বেশি খেলে মুখে দুর্গন্ধ হয়।
- গর্ভকালিন মহিলাদের কাঁচা রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ এতে করে প্রসব বেদনা বাড়তে পারে। অনেক মায়েরা আছেন যারা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন তারাও এভাবে রসুন খাওয়া থেকে দূরে থাকুন।
- রসুন যেহেতু উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই এভাবে নিয়মিত রসুন খেতে থাকলে হঠাৎ করে শরীরে নিম্ন রক্তচাপের উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
- জানা গেছে যে, মাত্রাতিরিক্তভাবে কাঁচা রসুন সেবনের ফলে চোখের দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এতক্ষণ আমরা রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে উভয় দিকই জানলাম। তবে অপকারের চাইতে রসুনের উপকারিতার পরিমাণই বেশী। তাই বলে অতিরিক্ত কোন কিছুই শরীরের জন্য ভাল না। উপকারের আশায় হঠাৎ করে বেশী বেশী রসুন না খেয়ে ধীরে মাত্রা বাড়াতে পারেন। তবে সেটা অবশ্যই দুই বা তিন কোয়ার বেশী যেন না হয়।