ব্লাড প্রেসার মাপার সঠিক নিয়ম। আমাদের দেহের সবগুলো অঙ্গ প্রত্তঙ্গ যেন সঠিকভাবে কাজ করে সেজন্য বয়সের একটি নির্দিষ্ট সময়ে গিয়ে ডাক্তারের কাছে চেক আপের জন্য যাওয়া উচিত। এজন্য যারা একটু স্বাস্থ্য সচেতন তারা নিয়মিত ব্যায়াম করা থেকে শুরু করে ডায়েট করাও শুরু করে দেন। তবে, নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য আপনি যাই করেন না কেন সবকিছুই করতে হবে নিয়ম মেনে ও প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শক্রমে। এগুলোর পাশাপাশি আপনার BP বা ব্লাড প্রেসার সঠিক আছে কিনা সেজন্যও নিয়মিত BP বা ব্লাড প্রেসার চেক করা উচিত।
আপনার BP বা ব্লাড প্রেসার High অথবা Low হতে থাকলে শরীরে বিভিন্ন রকমের সমস্যা তৈরি হয়। এমনকি আপনার মৃত্যুও হতে পারে। তাই স্বাস্থ্য সচেতন অনেকেই আছেন যারা বাড়িতে নিজেই নিজের BP বা ব্লাড প্রেসার মেপে দেখেন তাঁদের প্রেসার কম নাকি বেশী হচ্ছে। নিশ্চয়ই এটা একটা ভাল উদ্যোগ। ভেবে দেখুনতো? এই ব্লাড প্রেসার মাপার সঠিক নিয়ম না জানার কারণে আপনি কোন ভুল করছেন নাতো? তাঁদের কথা ভেবে এখানে BP বা ব্লাড প্রেসার মাপার সঠিক নিয়ম আর দিক নির্দেশনা নিয়ে এখানে আলোচনা করা হয়েছে।
High Blood Pressure এবং Low Blood Pressure কি?
একজন সুস্থ সবল বেক্তির স্বাভাবিক রক্তচাপ থাকার কথা ১২০/৮০ মিলিমিটার মার্কারি। কিন্তু কোন কারণে এটা যদি ১২০/৮০ এর বেশি হয় তখন সেটিকে High Blood Pressure বা উচ্চ রক্তচাপ বলে। এটাকে Hypertension ও বলা হয়। অপর দিকে এটা যদি ১২০/৮০ এর কম হয় তখন তাকে Low Blood Pressure বলে। আমাদের সুস্থ থাকতে হলে ব্লাড প্রেসার কমও থাকা যাবে না আবার বেশীও থকতে পারবেনা।
ব্লাড প্রেসার মাপতে গিয়ে আমরা প্রেসার মাপার সঠিক নিয়ম না জানার কারণে অনেক রকমের ভুল করে থাকি। এতে করে প্রেসার মাপার পর আমাদের ব্লাড প্রেসার স্বাভাবিকের থেকে কম বা বেশি দেখায়। যাতে করে প্রেসারের সঠিক অবস্থা জানা যায় না। ফলে চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র প্রদানের সময় কম বা বেশি চিকিৎসা হয়ে যায়। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই ব্লাড প্রেসার মাপার সঠিক নিয়ম টি জানা খুবই জরুরী।
তাই আপনি কিভাবে ঘরে বসে নিজেই আপনার নিজের অথবা অন্য কারো ব্লাড প্রেসার মাপতে পারেন তার সঠিক নিয়ম এখানে সহজ ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে। তাই এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হলো। যাতে করে কোন কিছু মিস না হয়ে যায়। কথায় আছে, অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী। তাই জানবেনই যখন সঠিক পদ্ধতিটাই জানুন।
প্রেসার মাপার পূর্ব প্রস্তুতিঃ পেশার মাপার আগে আমাদেরকে দুটি বিষয়ের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে।
০১। ব্লাড প্রেসার মাপার আধা ঘন্টা আগে থেকেই রুগীকে নির্দিষ্ট কিছু কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এই কাজগুলো করে প্রেশার মাপলে প্রেসার রিডিং বাড়িয়ে দেখাতে পারে। ফলে এসব কাজের পরে প্রেশার মাপলে প্রেসারের প্রকৃত অবস্থা বুঝা যায় না। তাহলে চলুন এই কাজগুলো কি কি সেটা জেনে নেই। সেই কাজগুলো হল- চা, কফি, কোমল পানীয় পান, ধূমপান ও এক্সারসাইজ। চা, কফি আর কোমল পানিয়তে থাকে ক্যাফেইন যা খেয়ে প্রেসার মাপলে রোগীর প্রেসার কে বাড়িয়ে দিতে পারে। আর সিগারেটে আছে প্রচুর পরিমানে নিকোটিন। সেটাও ব্লাড প্রেসার বাড়িয়ে দিতে পারে। আবার ব্যায়ামের পরে ব্লাড প্রেসার মাপলে ব্লাড প্রেসার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
০২। প্রেসার মাপার সময় নিজেকে স্বাভাবিক বা স্বস্থিতে রাখুন। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন সহ বিশ্বের অন্যান্য সমমনা প্রতিষ্ঠানগুলি পরামর্শ দেয় যে ব্লাড প্রেসার মাপার আগে রোগীকে কমপক্ষে পাঁচ মিনিট চুপচাপ বসে বিশ্রাম নিতে হবে। এই পাঁচ মিনিট অন্য কারো সাথে কথা বলা যাবে না। অর্থাৎ নিজেকে রিলাক্স করার জন্য এই সময়টাকে কাজে লাগাতে হবে। প্রেশার মাপার সময় সস্থিতে থাকা নিয়ে আরেকটি কথা বলা দরকার।
সেটা হলো রোগীর পেটে যদি প্রসাবের চাপ থাকে তাহলে শরীরে অস্বস্তি বাড়াতে পারে। ফলে প্রেসার মাপার সময় ব্লাড প্রেসার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই ব্লাড প্রেসার মাপার আগে এই সমস্ত জরুরী কাজকর্মগুলো সেরে নেয়াটা জরুরী। যাতে কোন প্রকার চাপ বা অস্বস্তি না হয়। এই গেল আমাদের ব্লাড প্রেসার মাপার প্রস্তুতি নিয়ে পরামর্শ।
এখন ব্লাড প্রেসার মাপার সঠিক ০৮ টি নিয়ম আলোচনা করা হল
০১। কোন অবস্থায় থেকে ব্লাড প্রেসার মাপবেনঃ আপনি ব্লাড প্রেসার শুয়ে, বসে, দাঁড়িয়ে নাকি হেলান দিয়ে অর্থাৎ কোন অবস্থায় থেকে ব্লাড প্রেসার মাপতে হবে সেটা জানাটাও অত্যন্ত জরুরী। এর সঠিক উত্তর হল ব্লাড প্রেসার মাপার সময় রোগীকে অবশ্যই চেয়ারে বসে প্রেসার মাপতে হবে। তাই সেই বসারও কিছু সঠিক নিয়ম রয়েছে। তবে আপনি যেখানে বসেই প্রেসার মাপুন না কেন আপনাকে দুটি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে ব্লাড প্রেসার পরিমাপের সময়। আপনি পিঠ কিছু একটার সাথে হেলান দিয়ে রয়েছেন এবং সোজা হয়ে বসেছেন।
অনেকে আছেন বিছানায় বসে প্রেশার মাপেন। তবে বিছানায় বসে প্রেশার মাপলে পিঠে হেলান দিয়ে বসার জন্য কোন কিছু থাকে না। আপনার পিঠকে যদি কোথাও হেলান না দিয়ে ব্লাড প্রেসার মাপেন তাহলে আপনার সিস্টোলিক প্রেসার অর্থাৎ উপরের যেই সংখ্যাটি আসে সেই সংখ্যাটি ৫ থেকে ১৫ পয়েন্ট পর্যন্ত বেশি হতে পারে। অপরদিকে ডায়াস্টোলিক বা নিচের সংখ্যাটি 6 পয়েন্ট পর্যন্ত বেশি হতে পারে।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন যে প্রেসার মাপার সময় পিঠ হেলান দিয়ে বসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আবার কেউ কেউ দেখা যায় সোফায় বসে প্রেশার মাপেন। এতে প্রেশার বেশি আসার সম্ভাবনা থাকে। কারণ সোফা বানানো হয় সাধারণত আরাম করে বসার জন্য। তাই এখানে সোজা হয়ে বসা একটু মুশকিল।
আপনি সোজা হয়ে না বসে সফায় কাত হয়ে বসে প্রেশার মাপতে গেলে প্রেসার বেশি আসার সম্ভাবনা থাকে। তাহলে কিভাবে বসতে হবে? ব্লাড প্রেসার মাপার জন্য একটি চেয়ারের পিঠ হেলান দিয়ে সোজা হয়ে বসতে হবে। এটাই হলো ব্লাড প্রেসার মাপার সময় বসার সঠিক পদ্ধতি। যেমন- কাঠের শক্ত চেয়ার যেখানে হেলান দিয়ে বসা যায় কিন্তু পিঠ সোজা থাকে ঠিক তেমন চেয়ার নির্বাচন করতে হবে। আমাদের ডাইনিং টেবিলের চেয়ারগুলা সাধারণত এমন হয়।
এখানে কিছু কথা না বললেই নয়। ব্লাড প্রেসার মাপার নিয়ম আর নিষেধগুলো জানতে গিয়ে এই মুহূর্তে আপনি হয়তো কিছুটা বিরক্ত বোধ করছেন বা এমন প্রশ্ন মনের মধ্যে আসতে পারে যে আমার ব্লাড প্রেসার মাপতে গিয়ে যদি ৫-৭ পয়েন্ট বেশি আসে তাহলে কি বা আসে যায়। বিষয়টি একটু ক্লিয়ার করে বললেই সহজে বুঝতে পারবেন। আপনার ব্লাড প্রেসার কত আছে সেটা দেখে ডাক্তার অনেক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। যেমন- আপনাকে দেয়া ঔষধগুলো ঠিকমত কাজ করছে কিনা, ঔষধের ডোজ বাড়াতে হবে কিনা বা কমাতে হবে কিনা ইত্যাদি। ব্লাড প্রেসার মাপার নিয়ম সঠিকভাবে না জানার কারণে অথবা একটু অসতর্কতার কারণে আপনার ব্লাড প্রেসার যদি বেশি রিডিং দেখায় তাহলে আপনার ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকার পরেও মনে হবে আপনার ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে নেই। যে ঔষধ গুলো আপনাকে দেয়ার প্রয়োজন নেই সেটা আপনাকে খেতে দেয়া হবে। ওষুধ যেখানে কমানো যেত, সেখানে ওষুধ বাড়িয়ে দেয়া হবে। আর প্রেসার বৃদ্ধি থাকার কারণে আপনি নিজে ও আপনার আপনজনের বাড়তি টেনশন যুক্ত হতে থাকবে।
০২। প্রেশার মাপার সময় পা কিভাবে রাখতে হবেঃ ব্লাড প্রেসার মাপার সময় চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আপনার পায়ের পাতা দুটো মেঝেতে সমানভাবে রাখতে হবে। চাইলে বসার টুল বা মোড়ার উপরেও রাখতে পারেন যদি না মেঝে পর্যন্ত পা না লাগে। অনেকে বিছানার একপাশে বসে পা ঝুলিয়ে প্রেসার মেপে থাকেন। পায়ের পাতার নিচে কিছু না রেখে পা ঝুলিয়ে প্রেসার মাপলে প্রেসার বেশি আসতে পারে।
মনে রাখবেন পা একটির উপর আরেকটি উঠিয়ে রাখা যাবে না। এমন ভাবে বসলে পায়ের বড় রক্তনালীগুলোতে চাপ পড়ে। ফলে প্রেসার কিছুটা বেশি আসতে পারে। প্রেসারের উপরের সংখ্যা 8 পয়েন্ট পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে এবং নিচের সংখ্যাটি ৫ পয়েন্ট পর্যন্ত বাড়তে পারে। এইতো জেনে গেলেন প্রেসার মাপার সময় পা কিভাবে রাখতে হবে ও কিভাবে বসতে হবে।
০৩। প্রেশার মাপার সময় হাত কোথায় ও কিভাবে রাখতে হবেঃ ব্লাড প্রেশার মাপার সময় হাতের সঠিক অবস্থান জানাটাও জরুরী। ব্লাড প্রেসার মাপার সময় আপনার হাত হৃদপিণ্ড বা হার্ট বরাবর রাখতে হবে। হার্টের মাঝখানে বলতে বুকের মাঝখানের হাড়ের বরাবর লেভেলে। আর হাতকে কিছুর উপর বিছিয়ে রাখতে হবে। যেমন টেবিলের উপর অথবা চেয়ার এর বড় হাতল থাকলে সেটার উপর রাখতে পারেন। সেটাও না পারলে অর্থাৎ আরেকজনের হাতের উপর অবস্থান বুঝে বসাতে পারেন। হাত কেন কিছুর উপরে বিছিয়ে রাখবেন?
আপনার হাতের রক্ত নালীগুলোর ভিতর দিয়ে যে রক্তগুলো প্রবাহিত হচ্ছে সেটা থেকেই মেশিন প্রেসার রিডিং করে ফলাফল বলবে। তাই হাতের মাংসপেশিগুলো সংকুচিত হয়ে থাকলে প্রেসার বেশি আসবে। তাই হাত যদি কোন কিছুতে না বসান তাহলে হাতের মাংসপেশি সংকুচিত হতে থাকবে আর প্রেসার বেশি দেখাবে। আবার অনেকে হাত উঁচুতে রেখে প্রেসার মাপেন। তাই হাত যদি হার্টের লেভেলের উপরে বা উঁচুতে থাকে তাহলে প্রেসার কম দেখাবে। অপরদিকে হাত যদি হার্টের লেভেলের নিচে থাকে তাহলে প্রেসার বেশি দেখাবে। কখন এরকম হতে পারে?
আপনি যদি চেয়ারে বসে হাত ঝুলিয়ে প্রেসার মাপেন তাহলে সেটা হার্টলেভেল এর নিচে হবে। বিছানায় শুয়ে হাত বিছিয়ে প্রেসার মাপলে সেটা হার্টের লেভেলের নিচে হবে। তবে রোগী যদি অসুস্থ থাকে অথবা কোন কারণে যদি বসে প্রেশার মাপা সম্ভব না হয় তাহলে বিছানায় শুয়ে হাতটি বালিশের উপরে রেখে হার্টের লেভেল বরাবর আনতে হবে। হাত রাখা শিখে গেলেন তারপর?
০৪। হাতের উপর কাপড় থাকলে কি করতে হবেঃ প্রেসার মাপার সময় অবশ্যই হাতের উপর থেকে কাপড় সরিয়ে নিতে হবে। তাই প্রেসার মাপার সময় ধিলেধালা, হাফহাতা শার্ট, গেঞ্জি ইত্যাদি পরিধান করুন। যাতে করে স্কিনের উপর সরাসরি প্রেসার মাপা যায়। কেন এটা করতে হবে? কারণ হলো কাপড় কতটুকু মোটা বা পাতলা তার উপর ভিত্তি করে রিডিং ১৫ পয়েন্ট পর্যন্ত বেশি দেখাতে পারে। যেটা আপনার প্রকৃত প্রেসার নয়। অনেককে দেখা যায় প্রেসার মাপার আগে কাপড় গুছিয়ে উপরের দিকে উঠিয়ে নেন। হাতে মুড়িয়ে উঠালে সেই কাপড়টি হাতের ওই স্থানে শক্ত হয়ে বসে যায় ও হাতের মাংসপেশিতে চাপ পড়ে। ফলে প্রেসার রিডিং বেশি দেখাবে।
তাই অনেকে ডাক্তারের কাছে প্রেসার মাপতে যাওয়ার সময় দুই তিনটা কাপড় একটার উপর একটা পড়ে তারপর আসেন। যেমন- শীতকালে। প্রেসার পরিমাপের সময় এগুলো ঠিকমতো সরানো যায় না। তাই কৃত্রিমভাবে প্রেসার বেশি আসে। তাই প্রেসার মাপতে যাওয়ার সময় এমন কাপড় পড়ুন যাতে প্রেসার মাপার সময় সহজে খুলে নেয়া যায় বা উপরে উঠালে মাংসপেশীতে কোন চাপ না পড়ে।
০৫। প্রেশার মাপার মেশিন কিভাবে নির্বাচন করবেনঃ আমরা অনেকেই জানিনা প্রেসার মাপার যন্ত্রের নাম কি? আসলে রক্তচাপ / ব্লাড প্রেসার মাপার মেশিনের প্রকৃত নাম হলো- Sphygmomanometer। বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির যুগে এসে দেখা যায় হাতে, আঙ্গুলে, কব্জিতে পর্যন্ত প্রেসার মাপার মেশিন আবিষ্কৃত হয়েছে। তবে আমাদের সঠিক পেশার মাপার যন্ত্র যেটা কিনা হাতের মধ্যে রেখে মাপা যায় এমন মেশিন ক্রয় করতে হবে। বর্তমানে এটাই সঠিক ভাবে প্রেশার মাপার জন্য সবচাইতে নির্ভরযোগ্য। মেশিন কেনার সময় খেয়াল রাখবেন সেটার সাইজ আপনার হাতের মাপের সমান কিনা।
এই জন্য একটি ফিতার সাহায্যে আপনার হাতের কাফ এর মাপটি জেনে নিবেন। তাহলে প্রেশার মাপার মেশিন কিনতে আপনার সুবিধা হবে। সেই অনুযায়ী প্যাকেটের গায়ে সাইজ লেখা রয়েছে কিনা সেটা দেখে মেশিন কিনতে হবে। সাইজ সাধারণত সেন্টিমিটারের হিসেবে দেয়া থাকে। যেমন- ২২ থেকে ৩২ সেন্টিমিটার। হাতের মাপের তুলনায় ছোট কাফ দ্বারা প্রেশার মাপলে প্রেশার ১৫ পয়েন্ট পর্যন্ত বেশি আসতে পারে। আবার বড় কাফ দিয়ে প্রেসার মাপলে প্রেশার কম দেখাতে পারে।
০৬। ব্লাড প্রেসার কিভাবে মাপতে হবেঃ রোগী যদি ডান হাতি হয়, তাহলে বাম হাতে মাপতে হবে। আর বাম হাতি হলে ডান হাতে প্রেসার মাপতে হবে। অথবা দুই হাতের প্রেসার এর পার্থক্য যদি বেশি হয় তাহলে যেই হাতে প্রেসার বেশি রিডিং দেখাবে সেই হাতে মাপতে হবে। হাতে কাফ কিভাবে পড়বেন সেটা মেশিন ভেদে কাফের ডিজাইন ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তাই মেশিন কেনার পর প্যাকেটের মধ্যে যে বইটি থাকে সেটা দেখে নিলে আপনি সহজেই হাতে কাফ লাগাতে পারবেন। এটা সুন্দর করে ছবির মাধ্যমে এঁকে দেখানো থাকে।
- আরও পড়ুনঃ একজন গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকা কেমন হওয়া উচিত।
- আরও পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কি খেলে সন্তান মেধাবী ও বুদ্ধিমান হয়।
আর হ্যাঁ, একবার প্রেসার মেপেই শেষ করবেন না। দুই এক মিনিট পার পুনরায় মাপুন। দুটো ব্লাড প্রেসারই একটি কাগজে লিখে রাখবেন। যাদের নিয়মিত প্রেসার মাপতে হয় তারা আলাদা একটি নোট বই ব্যবহার করুন। যেখানে দিন, তারিখ ও সময়সহ লিখে রাখবেন ডাক্তারের সাথে সাক্ষাতে আলোচনা করার জন্য। তাহলে আপনার ব্লাড প্রেসারের উন্নতি না অবনতি হচ্ছে সেটা সহজে নিজেই নির্ণয় করতে পারবেন।
০৭। প্রেশার মাপার সময় কথা বলা যাবে কিনাঃ প্রেশার মাপার শুরুতে বিশ্রাম নেয়ার সময় যখন কথা বলা যাবে না তেমনি প্রেসার মাপার সময়ও কথা বলা যাবে না। এমনকি কারও কথা শোনাও যাবে না। তাই আপনার আশেপাশে যদি কেউ থাকে তাদেরকে কথা না বলতে অনুরোধ করবেন। কারণ প্রেশার মাপার সময় আপনি নিজে কথা বললে এমনকি অন্যের কথা শুনলেও শারীরিক ও মানুসিক প্রতিক্রিয়ার কারণে আপনার প্রেসার বেশি আসতে পারে। তাই ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে এই সময়টায় কথা বলা থেকে বিরত থাকুন।
০৮। প্রেসার মাপার সঠিক সময়ঃ ব্লাড প্রেসার মাপার সঠিক সমিয় হল সকালে ঔষধ খাওয়ার আগে এবং সন্ধ্যায় বা রাতে খাবার খাওয়ার আগে প্রেসার মাপতে হয়। তবে প্রয়োজন অনুসারে যেকোনো সময়ই নিয়ম মেনে ব্লাড প্রেসার মাপা যায়।
এতক্ষণ ব্লাড প্রেসার মাপার সঠিক নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এবং প্রেসার মাপার সময় আমাদের ভুলগুলো আমরা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছি। আশাকরি এই তথ্যগুলো আপনাদের অনেক কাজে আসবে।