সম্পূর্ণ ঘরোয়া কয়েকটি যাদুকরী উপায়ে মাত্র এক সপ্তাহে ত্বক ফর্সা ও সুন্দর করার টিপস। বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের শরীরেও অনেক ধরনের পরিবর্তন ঘটে। এখেত্রে ত্বকের স্কিনেও ব্যপক পরিবর্তন আমরা দেখতে পাই। কিন্তু এই বয়স বেড়ে যাওয়াকে আমরা কেউই ধরে রাখতে পারি না।
তাই বয়স যাই হোক না কেন ছেলে কিংবা মেয়ে প্রত্যেকেই চায় সবসময় তাদের ত্বক ফর্সা ও সুন্দর থাকুক। তাছাড়া সৌন্দর্যের প্রশংসা শুনতে কিন্তু সবাই চায়। প্রত্যেকেই চায় সবার সামনে নিজেকে অনেক আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে।
আর এজন্য কোন প্রকার যাচাই বাছাই ছাড়া শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন দেখেই সবাই বিভিন্ন কেমিক্যাল যুক্ত সৌন্দর্যবর্ধক ফেয়ারনেস ক্রিম ব্যবহার করে থাকে। তবে ত্বকের জন্য এসমস্ত কেমিক্যালযুক্ত ফেয়ারনেস ক্রিমের ব্যবহার খুবই ক্ষতিকর।
বর্তমানে কর্মব্যস্ততা কিংবা পড়াশুনার চাপে এখন আর কেউ ঘরেও বসে থাকতে পারে না। তাই অনেক সময় এই ব্যস্ততার কারনে ত্বক ফর্সা ও সুন্দর করার জন্য সঠিক যত্ন নেওয়ার সময় পাওয়া যায় না। ফলে একদিকে যেমন কাজের প্রচন্ড চাপ আবার বাইরেও প্রচণ্ড গরম আর ঘামের দুর্গন্ধ। আবার আছে বৃষ্টি কিংবা বৈরী আবহাওয়া, বায়ু দুষণ ইত্যাদি।
এরকম পরিস্থিতিতে তাই ধিরে ধিরে হারিয়ে যেতে থাকে আপনার সৌন্দর্য আর ত্বকের লাবণ্য। কিন্তু আমরা চাইলে ঘরে বসেই সম্পূর্ণ ঘরোয়া উপায়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে কিছু সঠিক পদ্ধতি ব্যবহার করে মাত্র এক সপ্তাহে ত্বক ফর্সা ও সুন্দর হয়ে উঠতে পারি।
তাহলে আসুন জেনে নেই সম্পূর্ণ ঘরোয়া কয়েকটি যাদুকরী উপায়ে মাত্র এক সপ্তাহে ত্বক ফর্সা ও সুন্দর করার টিপস।
১। টমেটো ও লেবু: টমেটো টি লাল জীবানু মুক্ত এবং ফ্রেশ হতে হবে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে লাইকোপেন নামক একটি প্রাকৃতিক রাসায়নিক উপাদান। এই লাইকোপেন নামক উপাদান টি ত্বকের সব ধরনের দাগ দূর করে দেওয়ার পাশাপাশি ত্বকের মৃত কোষগুলোকেও দূর করে দেয়। তাই এই টমেটোর ব্যবহার আপনার ত্বক ফর্সা ও সুন্দর আর উজ্জ্বল হয়ে উঠবে তাড়াতাড়ি।
ব্যবহার প্রনালী: প্রথমে একটি টমেটো ভাল করে ধুয়ে কেটে টুকরো করে নিন। তারপর এক থেকে দুই টুকরো টমাটোর সাথে দুই চামচ লেবুর রস মিশিয়ে সবগুলোকে একত্রে ব্লেন্ডারে ফেলে পেস্ট বানিয়ে একটি মিশ্রন তৈরি করুন। এখন এই মিশ্রনটাকে ভাল করে মুখে লাগিয়ে কমপক্খে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর বিশ মিনিট পর সম্পূর্ণ মুখটাকে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন।
২. অ্যালভেরা ও বাদাম: অসাধারণ ঔষুধী গুনে ভরপুর এই অ্যালভেরা। ত্বকের কালচে হয়ে যাওয়া দাগকে দূর করার জন্য এটি খুবই কার্যকরী। এছাড়া নানারকম স্কিন ডিজিজের প্রকোপ কমাতেও ইহা সাহায্য করে। অন্যদিকে, বাদাম গুঁড়ো মুখে জমে থাকা ময়লা এবং ব্ল্যাক হেডস দূর করতে সাহায্য করে।
ব্যবহার প্রনালী: দুই চামচ অ্যালভেরার জেল নিয়ে তাতে সামান্য পরিমানে বাদাম গুঁড়ো মিশিয়ে একটা পেস্ট বা মিশ্রন তৈরি করুন। তারপর সেই তৈরি করা মিশ্রনটি ভাল করে মুখে লাগিয়ে ১৫-৩০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্খা করে পরিস্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। তবে বাদাম না চাইলে শুধুমাত্র অ্যালভেরার জেল ব্যবহার করতে পারেন।
৩. দই, মধু ও লেবু: মধু শরীরের ত্বককে একেবারে ভেতর থেকে সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করে। আর মধুর সাথে লেবুর রস এবং দইয়ের সংমিশ্রনে উপস্থিত ভিটামিন-সি আপনার ত্বক ফর্সা ও সুন্দর করে আপনাকে সম্পূর্ণরূপে উজ্জ্বল এবং ফর্সা করে তুলবে। আর আপনি পাবেন দিপ্তিময় উজ্বল ত্বক।
ব্যবহার প্রনালী: প্রথমে এক চামুচ দইয়ের সাথে অল্প পরিমানে মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। তারপর চোখ এর দিকে খেয়াল রেখে সেই পেস্টটা সম্পূর্ণ মুখে ম্যাসেজ করে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট ধরে অপেক্খা করুন। তারপর সময় শেষ হয়ে গেলে মুখটা পরিস্কার পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
৪. ডিমের গোপন ফেস প্যাক: অনুজ্বল ত্বককে দ্রুত ফর্সা আর সুন্দর করে তুলতে ডিমের যথাযথ ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। ত্বকের পরিচর্যায় যুগ যুগ ধরে কাঁচা ডিমের ব্যবহার হয়ে আসছে। তাই যে কোন ত্বকের পরিচর্যায় ডিমকে ব্যবহার করতে ভুল করবেন না।
ব্যবহার প্রনালী: ত্বকের যত্নে এক্ষেত্রে একটা ডিমের কুসুম নিয়ে সেটিকে ভাল করে ফেটিয়ে নিন। তারপর হাত দিয়ে সেটিকে সমস্ত মুখে ভাল করে লাগিয়ে দশ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। দশ মিনিট পর পরিস্কার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।
৫. আমের খোসা এবং দুধ: এই গরমে একটি কাঁচা আমের জুস আপনার শরীরকে যেমন প্রশান্তি ও ভিটামিন সি এনে দেয় তেমনি ত্বকের যত্নে আমের খোসাটিরও রয়েছে অনেক গুন। তাই দুধের সাথে আমের খোসা মিশিয়ে ত্বকে লাগালে ত্বকের অনেক উপকার পাওয়া যায়।
ব্যবহার প্রনালী: মিশ্রনটি তৈরি করতে প্রথমে একটি কাঁচা আম ভাল করে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। তারপর এক গ্লাস অথবা পরিমাণ মতো দুধে অল্প পরিমান আমের খোসা মিশিয়ে ভাল করে ব্লেন্ড করে মিশ্রন তৈরি করে নিতে হবে।
তারপর তৈরি করা মিশ্রনটিকে চোখের দিকে খেয়াল রেখে মুখে এবং গলায় কিছুক্খন লাগিয়ে রাখুন। প্রয়োজনে মিশ্রনটি আপনার ঘাড়েও লাগাতে পারেন। তারপর মিশ্রনটি শুকিয়ে গেলে পরিস্কার পানি দিয়ে ব্যবহৃত স্থানসমূহ ভাল করে ধুয়ে ফেলুন।
৬. কাঁচা হলুদ মধু ও দুধ: কাঁচা হলুদ ত্বককে উজ্জ্বল করতে একটি অত্যন্ত কার্যকরী একটি প্রাকৃতিক উপাদান। এই কাঁচা হলুদের সাথে দুধ ও মধুর ব্যবহার আপনার ত্বক ফর্সা ও সুন্দর করবে। আর আপনি হবেন আরও আকর্ষনীয় ও সুন্দর।
ব্যবহার প্রনালী: প্রথমে দেড় ইঞ্চি সাইজের একটুকরা কাঁচা হলুদ পিশে পেষ্ট করে তার সাথে সামান্য পরিমান মধু এবং সমপরিমান গরম দুধ মিশিয়ে এক সপ্তাহ পান করুন। এছাড়া কাঁচা হলুদ পাতলা করে বেটে গোসলের আগে মুখমন্ডল সহ সমস্ত শরীরে ভালকরে মেখে শুকানো পর্যন্ত অপেক্খা করুন। তারপর গোসলে গিয়ে ভালকরে ধুয়ে নিন। এভাবে এক সপ্তাহ নিয়মিত করুন আর উপভোগ করুন দাগহীন উজ্জ্বল সুন্দর ত্বক।
৭. লেবুর রস ও চিনি: উজ্জল আর ফর্সা ত্বক পাওয়ার জন্য এই পদ্ধতিটি দারুন কাজ করে। আর সহজে এটা ঘরে বসেই করে ফেলা যায়।
ব্যবহার প্রনালী: প্রথমে একটি পাত্রে লেবু থেকে সম্পূর্ণ রস চিপে বের করে নিন। তারপর লেবুর রসের সাথে ১ চামচ চিনি ভাল করে মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রনটি আপনার হাতে, আঙ্গুলে, পায়ে ও মুখে ভাল করে ঘষে ঘষে ত্বকের সাথে একেবারে মিশিয়ে শুকিয়ে ফেলুন অথবা ত্বকের সাথে মিলিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্খা করুন। তারপর ব্যবহৃত স্থানসমূহ পরিস্কার ঠাণ্ড পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৮. গোলাপজল ও দুধ: যে কোন অনুষ্ঠানে কিংবা রান্নায় গোলাপজল একটি অতিপ্রয়োজনীয় সুগন্ধি উপাদান। এই গোলাপজলে এমন কিছু উপাদান বিদ্বমান রয়েছে যা ত্বককে একদম ভিতর থেকে পরিষ্কার করে। আর স্কিনকে করে সুন্দর এবং তুলতুলে নরম।
ব্যবহার প্রনালী: প্রথমে গোলাপজল এবং কাঁচা দুধ সমপরিমাণে নিয়ে একত্রে মিশিয়ে বানিয়ে নিতে হবে। তারপর রাতে শুতে যাওয়ার আগে সেই মিশ্রনটি ভালভাবে মুখে ও হাতের কনুই পর্যন্ত লাগিয়ে ফেলুন। মিশ্রনটি শুকিয়ে গেলে শুয়ে পড়ুন এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে ভালকরে ধুয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতিটা এতটাই কার্যকরী যে আপনি মাত্র তিন দিন ব্যবহার করলেই দেখবেন আপনার ত্বক ফর্সা ও সুন্দরআর উজ্জ্বল হয়েছে কতটা।
৯. দুধ ও কলা: আমরা প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় দুধ ও কলা যেমন রাখি ঠিক তেমনি অল্প সময়ে উজ্জ্বল ত্বকের জন্য দুধ ও কলারও কোন বিকল্প নেই।
ব্যবহার প্রনালী: এটি করার জন্য প্রথমে একটা কলাকে ভালকরে পরিস্কার হাতে চোটকিয়ে নিন। তারপর চটকান কলার সাথে পরিমাণ মতো দুধ মিশিয়ে একটি মিশ্রন বা পেষ্ট তৈরি করুন। আর মিশ্রনটি তৈরির সময় খেয়াল রাখবেন যেন মিশ্রনটি ভালভাবে মিহি হয়ে যায়। এখন এই মিশ্রনটি ভালকরে মুখে লাগান এবং মিশ্রনটি ত্বকে শুকিয়ে গেলে পরিস্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
১০. ডাবের পানি: এই গরমে শরীরের জন্য এক গ্লাস কচি ডাবের পানি যেমন উপকারী তেমনি ত্বকের কালচে দাগ দূর করতে ও ত্বককে সুন্দর করে তুলতেও ডাবের পানির জুড়ি নেই। তাই যুগ যুগ ধরে রমনীরা ঘরোয়াভাবে ত্বকের যত্নে এই ডাবের পানি ব্যবহার করে আসছেন।
ব্যবহার প্রনালী: উপকার পাবার জন্য প্রতিদিন সকালে ও রাতে অন্তত দিনে দুবার ডাবের পানি দিয়ে হাত ও মুখ ধোয়ার চেষ্টা করুন। তাহলে দ্রুত আপনার ত্বকের কালচে দাগ উঠে যাবে। আর আপনি পাবেন মসৃন, ফর্সা ও সুন্দর একটি উজ্জ্বল ত্বক।
এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো একদম সহজ। চাইলে অল্প একটু সময় নিয়ে যে কোন বয়সের নারী পুরুষ এ পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে মাত্র এক সপ্তাহে ত্বক ফর্সা ও সুন্দর করে তুলতে পারেন।
খুব সুন্দর লাগল। অনেক টিপস জানলাম। এরকম আরও টিপস শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি।
১০ টি টিপস খুব ভাল লাগল আমার। আমি নিয়মিত এই নিয়মগুলো ফলো করতে চাই। ধন্যবাদ এডমিন। এরকম সুন্দর একটি লেখা শেয়ার করার জন্য। আশাকরব পরবর্তিতে আরও ভাল ভাল পোষ্ট শেয়ার করবেন।
The Beauti tips are very much helpful and good also. My wife follow this tips regularly.
Good article. Love it.
Very very good article. It’s a nice website. I hope next time to be upload meny good article like this post. I suggested every people follow this site.