ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ বলতে গেলে আমরা সবাই জানি ডেঙ্গু একটি ভাইরাস জনিত ও মশক বাহিত রোগ। এডিস নামক এক ধরনের মশার কামড়ে যে ভাইরাসটি শরীরে প্রবেশ করে এবং সেই ভাইরাসের কারনে এই ডেঙ্গু রোগ হয়ে থাকে। সাধারনত সকাল বেলায় এই এডিস মশাগুলো বেশী কামড়ায়। অন্যান্য ভাইরাসের মত প্রায় কাছাকাছি সব ধরনের লক্ষনই কিন্তু ডেঙ্গুতে বিরাজমান রয়েছে।
এই রোগটি বাচ্চা থেকে শুরু করে এডালটরাও এখন প্রচুর আক্রান্ত হচ্ছেন। আর ডেঙ্গু হয়েছে ভেবে জ্বর আসলেই কি হাসপাতালে ছুটতে হবে ? নাকি বাড়িতে বসেই চিকিৎসা নেয়া যায়? ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও ডেঙ্গু রোগের কতগুলো স্টেজ রয়েছে। তাই গেলেও কোন স্টেজে গিয়ে হসপিটালে যাবেন? সবকিছু নিয়েই থাকছে এই আলোচনায়।
ডেঙ্গু রোগের লক্ষণঃ
ডেঙ্গু রোগটি একদম হঠাৎ করেই দেখা দেয়। দেখা গেল আপনি কালকে একদম পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন। কিন্তু আজকে হঠাৎ করেই আপনার শরীরে জ্বর চলে এলো। শুরুতে এভাবেই ডেঙ্গু জ্বর দেখা দেয়। এটাই হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বরের প্রধান ও প্রাথমিক লক্ষণ। এই ডেঙ্গু শুরু হয় সাধারণত উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর দিয়ে।
এই জ্বরটা প্রথম থেকে অনেক উচ্চ তাপমাত্রা যেমন- ১০৩, ১০৪ ও ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তারও বেশী পর্যন্ত জ্বর হতে পারে এবং শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য যদি মুখে খাওয়ার ঔষধ কিংবা পায়ু পথে সাপজিটরি দেয়ার পরেও তাপমাত্রা কমে না।
সেই সাথে শুরু হয় রুগীর প্রচন্ড গা হাত পা ব্যথা, শরীর খুব দুর্বল লাগা। অনেক সময় স্কিনের মধ্যে কিছু কিছু জায়গায় ছোট ছোট রেশ বের হতে পারে, গাম ব্লিডিং হতে পারে, চোখে ব্যথা, চোখের পিছনে চোখ নারাচরা করলে ব্যথা অনুভব করা, হাড়ে হাড়ে ব্যথা, মাংস পেশীতে ব্যথা, আবার কখনও পেটেও ব্যথা করতে পারে, আবার হঠাৎ করে পাতলা পায়খানা আরম্ভ হতে পারে।
এজন্য এই জ্বরটাকে কিন্তু আরেকটা নামে ডাকা হয়। যেটাকে আমরা বলি ব্রেক বোন ফিভার বা হাড়ভাঙ্গা জ্বর। এই জ্বরের সাথে ডেঙ্গু রোগের অন্যান্য লক্ষণ এর মধ্যে আরও থাকতে পারে মাথা ব্যথা ও শরীর খুব দুর্বল হয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়া।
প্রতি বছরেই ডেঙ্গু ভাইরাসটি নতুন নতুন সিমটমস নিয়ে আমাদের সামনে হাজির হচ্ছে। যেমন- এবারের ২০২৩ সালে এসে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রুগী নতুন কিছু ভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ আপনার স্কিনের সুরক্ষার জন্য কি করবেন ও কি করবেন না।
সেটা হচ্ছে যে জ্বরের সাথে সাথে নাক দিয়ে পানি পড়ছে এবং রুগীর ডায়রিয়া শুরু হচ্ছে। যা ডেঙ্গু রগে আক্রান্ত বেক্তির আগে কখনো এমন হয়নি এবং ডেঙ্গুর আগে প্রথম দিকে যে ডেঙ্গুগুলো হতো তখন দেখা যেত দুই তিন দিন পার হলেই রুগীর শরীরে ছোট ছোট রেশ বের হত।
কিন্তু এখন ২০২৩ সালে এসে ডেঙ্গু রুগীদের শরীরে সেই রেশ আসছে না। রুগী বুঝতে পারছেন না যে তাঁর কি হয়েছে। ফলে অনেক রুগী ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলেও ধরে নেন যে তার হয়তো ডেঙ্গু হয় নাই।
আরেকটা বড় জিনিস এবারে ঘটছে সেটা হল ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ দেখা দিলেই ডেঙ্গুর যেই ক্লাসিক্যাল টেস্ট করতে হয় যেটাকে বলা হয় এন এস ১ বা অ্যান্টিজেন সেটা কিন্তু এইবার অধিকাংশ ক্ষেত্রে নেগেটিভ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ডেঙ্গু রুগীদেরকে বিশ্বাস করাতে কষ্ট হচ্ছে যে তাঁর ডেঙ্গু হয়েছে।
কারণ ডেঙ্গু মানে হচ্ছে এন এস ১ বা অ্যান্টিজেন পজেটিভ হবে এবং প্লাটিলেট কাউণ্ট কমবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে প্লাটিলেট কাউন্ট কিন্তু এবার খুব একটা বেশি কমছে না। ফলে রোগীরা অসচেতন থাকেছেন এবং ডেঙ্গু জ্বরের প্রস্তুতি বলতে আমরা যেটা বলি সে ধরনের কোন প্রস্তুতি আমাদের অধিকাংশ লোকের মধ্যেই থাকে না।
ডেঙ্গু হলে আমাদের কখন হাসপাতালে যাওয়া উচিতঃ
প্রত্যেকটি রোগেরই কয়েকটি করে স্টেজ থাকে এবং একেক স্টেইজে গিয়ে একেক রকম সিমটমস বা লক্ষণ প্রকাশ করে। তেমনি করে ডেঙ্গু রোগেরও তিনটি স্টেজ রয়েছে। প্রথমটিকে বলা হয় ডেঙ্গু নরমাল ফিভার।
দ্বিতীয়টিকে বলা হয় ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার। এবং
তৃতীয়টিকে বলা হয় ডেঙ্গুর শক সিনড্রোম।
ডেঙ্গু নরমাল ফিভার মানে সাধারণ জ্বর হল, তিন দিনের মত থাকল সাথে গা হাত পায়ে বেথা এলো আবার চলে গেল। খাওয়াদাওয়া ঠিকমত করে রুগী একদম সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেল। তারপর জ্বরটা চলে যাওয়ার পর দুই তিন দিনের ভেতর রুগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেল এবং ডেঙ্গুর কোন ধরনের সাইন সিমটমস নেই যেগুলো নিয়ে উপরে আলোচনা করা হয়েছে। প্রাথমিক স্টেজে ডেঙ্গু জ্বর এভাবে এসে চলে যায়।
দ্বিতীয়টি হল ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার। এই স্টেজ টি প্রাথমিক স্টেজ থেকে একটু গুরুত্বপূর্ণ বলতে হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগটি মারাত্মক রক্তক্ষরণ সৃষ্টি কারী হিসাবে রূপ নিতে পারে। যেমন গাম ব্লিডিং আরম্ভ হতে পারে। স্কিনের নিচে ব্লিডিং হতে পারে। যার দরুন স্কিনের উপরে লাল লাল রেশ আসে।
যাকে চিকিৎসকের ভাষায় বলা হয় purpuric spots বা small spots on skin বলা হয়। তাই একে ডেঙ্গু রক্তক্ষরী জ্বর বা ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বলা হয়। এর ফলে রক্তপাত হয়, রক্তে অনুচক্রিকা উপাদানের মাত্রা কমে যায় এবং রক্তে প্লাজমার নিঃসরণ ঘটে। ফলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে চলে যায়।
তৃতীয়টি হল ডেঙ্গু শক সিনড্রোম। মানে বাচ্চা বা রুগী একে বারেই দুর্বল হয়ে নেতিয়ে পড়েছে। পালস ভাল পাওয়া যাচ্ছেনা, ব্লাড প্রেশার একেবারেই কমে গেছে, প্রস্রাব ভাল করছে না, হার্ট রেট স্বাভাবিকের চেয়ে প্রচুর বেশী। এই স্টেজ টি হল ডেঙ্গুর শক সিনড্রোম।
ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ দেখে আপনি কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন আর কখন যাবেন না?
এক্ষেত্রে সাজেশান হল যখন জ্বর আসবে এক দিন বা দুই দিন অপেক্ষা করতে হবে যে ডেঙ্গুর যে ওয়ার্নিং সিমটমসগুলো যেগুলো আছে সেগুলো রুগীর শরীরে প্রকাশ পায় কি না? যদি প্রকাশ পেয়ে যায় তাহলে আর দেরী না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। যদি সিমটমগুলো প্রথম দিন থেকেই প্রকাশ পায় তাহলেও দেরী করা যাবে না।
কিন্তু যদি গায়ে হালকা জ্বর আসে ও সাথে হালকা গায়ে ব্যাথা হয়, ব্যাথা খুব বেশী নয় তাহলে অন্তত তিন দিন অপেক্ষা করে পর্যবেক্ষণ করতে হবে জ্বর ও ব্যাথা কমছে কিনা। জ্বর ও ব্যাথা যদি না কমে তখন প্রথম কাজটি হল আপনাকে ডেঙ্গুর টেস্ট করতে হবে এবং রক্ত পরীক্ষা করতে হবে।
টেস্টে প্লাটিলেট কাউণ্ট যদি মুটামুটি এক লক্ষ থাকে এবং রুগী শারীরিক ও ক্লিনিক্যালি ভাল এবং চলতে ফিরতে সক্ষম আছে অর্থাৎ এ্যাক্টভিটি ভাল। (তবে একেবারে ভাল বলা যাবে না। তবে ভাল বলতে টেনশন মুক্তও থাকা যাবে না। কারণ যে কোন ভাইরাল ইনফেকশানে এ্যাক্টভিটিজগুলো তুলনামূলক কম হয়। তুলনামূলক কম কিন্তু অতটা কমও নয়) তাহলে আপনি বাড়ীতেই ডেঙ্গুর চিকিৎসা করতে পারবেন।
বাড়িতে থেকেই আপনাকে সমস্ত মনিটরিংগুলো করতে হবে। যেমন- বার বার রক্ত পরীক্ষা করা যে প্লেটিলেট কাউণ্ট কত থাকছে। কারণ প্লেটিলেটের কাউণ্টের উপরে ভিত্তি করেই চিকিৎসক তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপগুলো নিবেন।
এখন যদি প্লেটিলেট কাউণ্ট এক লাখের নিচে চলে যায় তাহলে আপনাকে একটু সাবধান হতে হবে। সাধারনত এই অবস্থায় রুগীকে হাসপাতালে ভর্তি হবার নির্দেশনা থাকে।
দ্বিতীয়ত হল যে ওয়ার্নিং সিমটমস। এগুলো যদি না থাকে। যদি সিম্পল জ্বর থাকে। এমনকি আপনি ডেঙ্গু টেস্টে যদি রেজাল্ট পজিটিভ হয়। কিন্তু ডেঙ্গু রুগীর ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি যদি ভাল থাকে, শরীরে দুর্বলতা না থাকে তাহলে রুগীকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করা সম্ভব।
সুতরাং ডেঙ্গু হলে কি করবেন এ সম্বন্ধে বলতে গেলে আমাদের কি করতে হবে সেটা আগে ঠিক করা উচিত।
কারণ ডেঙ্গু হলে কি ঘটবে সেটা যদি আমরা না জানি বা আমাদের কি করা উচিত সেটা যদি আমরা না নির্দিষ্ট করে না জানি তাহলে যত চেষ্টাই করি না কেন সেটা আমাদের কোন কাজে আসবে না।
ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে দুটি মারাত্মক ঘটনা ঘটতে পারে সেটা হল রুগীর ব্লাড প্রেসার কমে যেতে পারে এবং প্লাটিলেট কাউণ্ট কমে যেতে পারে। আগেই আলোচনা করা হয়েছে যে, এবার ডেঙ্গু রুগীর প্লাটিলেট কাউণ্ট খুব একটা বেশী কমছে না।
বরং এবার ডেঙ্গু রুগীদের ক্ষেত্রে যেটা বেশী পাওয়া যাচ্ছে সেটা হল রুগীর ব্লাড প্রেসার কমে যাচ্ছে যাকে বলা হয় ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম। দেখুন দুটি জিনসের কিন্তু ভবিষ্যৎ ঘটনা ঘটতে পারে। কার ক্ষেত্রে ঘটবে, কাদের ঘটবে বা এই ঘটনার কোন ভবিষ্যৎবাণী করতে পারব কিনা অথবা ডেঙ্গু রোগের কি কি লক্ষণ দেখে আমরা বলতে পারব যে আপনার ব্লাড প্রেসার কমে যাবে ও আপনার প্লাটিলেট কাউণ্ট কমে যাবে।
এখনও পর্যন্ত আমরা কেউই এটা সম্পর্কে স্পষ্ট করে বলতে পারিনা বা জানিনা। এখনো পর্যন্ত আমরা আমাদের ক্লিনিক্যাল ভাষায় যেটা বলি PREDICTOR ডেঙ্গু রুগীদের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত কোন PREDICTOR address করা যায়নি। তাই আমরা যখন দেখি যে রুগীর প্লাটিলেট কাউণ্ট কমে গেছে তখন প্লাটিলেট কাউণ্ট বাড়াতে চিকিৎসা দেয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ বোন মেরো ট্র্যান্সপ্লাণ্টেশান কি? ব্লাড ক্যান্সারের আধুনিক চিকিৎসা।
কিন্তু এই অবস্থায় ব্লাড প্রেশার যেন কোন ভাবেই না কমে সে জন্য রুগীদের ক্ষেত্রে পরামর্শ হল এই সিজনে অর্থাৎ ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপটা যখন বেশী থাকে বিশেষ করে জুন থেকে সেপ্তেম্বর পর্যন্ত এই সময়ে আপনার জ্বর আসলে আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণ রেস্ট নিবেন ও বিশ্রাম নিবেন এবং যতটা পারেন আপনি বাসায় বসে ওর স্যালাইন খাবেন এবং সাথে লিকুইড খাবার খাবেন।
আর খেয়াল রাখবেন কয়েকটি ডেঞ্জারাস সাইন। যাকে ওয়ার্নিং সাইন বলা যায়। সেটা হল যে আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণ ওরস্যালাইন খাওয়ার পরও যখন দেখছেন আপনার ব্লাড প্রেসার বাড়ছে না বরং প্রেসার কমে যাচ্ছে এবং আপনার বেশি বেশি বমি হচ্ছে সাথে কাউকে চিনতে পারছেন না, প্রচন্ড পেট ব্যথা অথবা আপনার শরীর এমন দুর্বল হয়ে গেছে যে আপনি স্বাভাবিক সাধারণ কাজ কর্ম করতে পারছেন না।
তখন সাথে সাথে ডাক্তারের কাছে যাবেন। জ্বর হওয়া মাত্র যদি সম্ভব হয় আশে পাশে সরকারি হাসপাতাল কিংবা প্রাইভেট কোন হাসপাতাল থাকলে সেখানে যোগাযোগ করুন।
কিন্তু আমরা সেটা না করে জ্বর আসা মাত্রই ভুল করে নিজেরাই নিকটস্থ ডিস্পেন্সারি থেকে হাই পাওয়ারের এন্টিবায়োটিক এনে খাচ্ছি ও নিজে নিজে চিকিৎসা নিচ্ছি। ফলে এই সমস্ত এন্টিবায়োটিক খাওয়ার সাথে সাথে আমাদের রুগীর শরীর আরও বেশী করে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ ব্লাড ক্যানসার কত প্রকার ও কি কি?
আবার এর পাশাপাশি আমরা স্যালাইন খাচ্ছি না। স্যালাইন খাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম হল। অনেকের মধ্যে একটা ধারণা আছে যে ওরস্যালাইন খেলে ঠান্ডা বেশি লাগে। আসলে এগুলা মনের ভুল ধারণা। এই সময়ে আপনার ওরস্যালাইন ও লিকুইড জাতীয় খাবার বেশী বেশী খাওয়া উচিত এবং প্রেসার, ডায়াবেটিস যাই থাকুক আপনি ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে আপনি ওরস্যালাইন ও লিকুইড খাবার খাবেন।
অনেক ডায়াবেটিস ও প্রেশারের পেশেন্টদের স্যালাইন খেতে বলা হয়। কিন্তু প্রেশারের রুগী স্যালাইন খেতে পারেন না মনে করে ডেঙ্গু হলে ভুলেও তিনি স্যালাইন খান না। ফলে ডেঙ্গুর শক সিনড্রোম নিয়ে ডাক্তারের কাছে আসতেছেন। তাই বলবো ডেঙ্গু হলে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নাই।
আবার ভয় পাই না বলে উপেক্ষা করারও দরকার নাই। তাই ডেঙ্গুজ্বর সন্দেহ হলে অথবা এই সিজনে হাই হিট ফিভার নিয়ে আসলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ও বাসায় বিশ্রাম নিন। পর্যাপ্ত পরিমাণ লিকুইড খাবার খান এবং ওরস্যালাইন খাবেন এবং অযথা কোনো ব্যথার ওষুধ ডাইক্লোফেনাক জাতীয় কিংবা এন্টিবায়োটিক ওষুধ খাবেন না।
পরিশেষে ডেঙ্গু হলে অন্যদের করনীয়ঃ
আমরা ডেঙ্গু রুগীর পরিচর্যার পাশাপাশি আমাদের নিজেদেরও অনেক কিছু করনীয় আছে। যেগুলো নিয়মিত করলে বাড়ির অন্যরা এই ডেঙ্গু হতে রেহাই পেতে পারেন।
যেমন- ঘর দরজা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাস প্রবেশের ব্যাবস্থা তৈরি করা। ঘরে যাতে মশা প্রবেশ করতে না পারে বা ঘরকে মশা মুক্ত রাখা, পোকা-মাকড় ধ্বংসকারী ঔষধ বা স্প্রে ঘরে ব্যাবহার করা।
রাতে ও দিনে ঘুমানোর সময় মশারী ব্যাবহার করা, আপনার আশেপাশে পরিস্কার রাখা, যত্রতত্র অব্যাবরিত পানি জমতে না দেয়া ও খেয়াল রাখা। রোগ জীবাণু ধ্বংস করতে বাড়ির চতুর্দিকে নিয়মিত ব্লিচিং পাউডার স্প্রে বা ছিটানো।
অর্থাৎ ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ সম্পর্কে আমাদের বেশী বেশী জানতে হবে ও অনেক বেশী সচেতন হতে হবে। তবেই আমরা ডেঙ্গুকে প্রতিরোধ করতে পারব।