Verification: 604f510ca357bb64

ইমপ্রেস করার উপায় কি ? প্রথম দেখায় কাউকে ইম্প্রেস করবেন কিভাবে

ইমপ্রেস করার উপায় কি ? প্রথম দেখায় কাউকে ইম্প্রেস করবেন কিভাবে। কাউকে প্রথম দেখায় আপনার পছন্দ হয়েছে ? তাই ভাবছেন প্রপোজ করবেন কিভাবে। কথায় আছে First Impression is the last impression. এটি একটি কথার কথা।

তবুও আমরা প্রথম পরিচয়ে একজন মানুষের সাথে যেভাবে সুন্দর করে কথা বলি। সেই মানুষটার মনের মধ্যে আমাদের ইম্প্রেশন টা যেভাবে তৈরি করার চেষ্টা করি। তার ওপর নির্ভর করে সেই মানুষটি আপনার সাথে দ্বিতীয়বার কথা বলবেন কিনা।

কিংবা আপনি যেই সম্পর্কটা একদম নতুন করে তৈরী করার চেষ্টা করছেন। সেটা নিয়ে তিনি পরবর্তীতে আর সামনে অগ্রসর হবেন কি না ? কারো মনের মধ্যে এই যে এক ধরনের ইম্প্রেশন ক্রিয়েট করা। এটাই আপনি কিভাবে করবেন। এই ইমপ্রেস করার উপায় কি হতে পারে ? আর কিভাবেই বা আপনি এখানে সফল হবেন। সেই মানুষটিকে ইমপ্রেস করার উপায় নিয়েই এখানে খুব চমৎকার করে আলোচনা করা হয়েছে।

এখানে এমন কিছু প্রসেস বা টিপস শেয়ার করা হয়েছে সেটা যদি আপনি সঠিকভাবে এপ্লাই করতে পারেন। তাহলে আপনি যে কোন জায়গায় আপনার জীবনের প্রথম ইম্প্রেশন টাকে খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করতে পারবেন। এমনকি আপনার কাজের জায়গা থেকে শুরু করে চাকরির ইন্টারভিউতে পর্যন্ত আপনি সফল হবেন।

কিংবা আপনি প্রথমবার কারো সাথে দেখা করতে বা ডেটিঙে যাচ্ছেন। কারো সাথে নতুন একটি বন্ধুত্ব বা প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করার কথা ভাবছেন অথবা আপনি কাউকে প্রথমবার অনলাইনে বন্ধু বানানোর কথা ভাবছেন। সব জায়গায় কিন্তু আমাদের এই ইম্প্রেশনকে খুব ভাল করে Maintain করতে জানতে হবে।

ইম্প্রেশন এর কথা বলতে গেলে একটা কথা সবার আগেই বলতে হবে সেটা হলো আমাদের কথা বলার স্টাইল বা ধরনটা সঠিক রাখতে হবে। এর সাথে সাথে আরও ছয়টি জিনিস যদি আপনি ঠিকমতো সঠিক ওয়েতে করতে পারেন তাহলেই কিন্তু আপনি সাকসেস। তাহলে এই ছয়টি ইমপ্রেস করার উপায় গুলো কি কি ?

  1. Attitude (কারো প্রতি নিজের মনোভাব)
  2. Behavior (আপনার ব্যাবহার কেমন)
  3. Communication skill (কারো সাথে যোগাযোগের দক্ষতা)
  4. Speaking language style (বলার সময় ভাষা প্রয়োগের স্টাইল)
  5. Humility in behavior (আচরণের মধ্যে নম্রতা)
  6. Proper use of clothing (সঠিক পোশাক নির্বাচন) 

এই ছয়টি জিনিসের একত্রিত সমন্বয়ের মাধ্যমে আপনার ইম্প্রেশনটাকে তৈরি করতে হবে। আলোচনার এই মুহূর্ত থেকে আপনাকে একটু মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

১। Attitude (কারো প্রতি নিজের চিন্তাধারা বা মনোভাব): এর মানে হল আপনার ভেতরের চিন্তাধারা কেমন। কাউকে প্রথম পরিচয়েই ইমপ্রেস করতে গেলে প্রথমে আপনার চিন্তাধারাটাকে ঠিক করতে হবে। তার মানে হল, আপনার মনের মধ্যেকার ফিলিংসটা সেই মানুষটার প্রতি কি ধরনের প্রকাশ করছেন সেটাই হোলো আপনার অ্যাটিটিউড।

আমরা আমাদের মনের মধ্যে যে ধরনের চিন্তা ভাবনাগুলো পোষণ করি সেটাই কিন্তু বাস্তবে আমাদের পার্সোনালিটি তে একটা প্রতিফলন ঘটায়। ফলে পরবর্তীতে আমরা কোথাও না কোথাও সেভাবেই Behave টা করে বসি। আপনার এই যে Attitude এর উপরেই আপনার সম্পর্কটা তৈরী হবে। কাউকে ইম্প্রেস করার প্রথম উপায় হল এটি।

০২। Behavior (আপনার ব্যাবহার কেমন): এর অর্থ হল আপনার ব্যবহার, আপনার আচরণ। ধরুন প্রথমবার কোন একজনের সাথে আপনার দেখা হল কথা হল। এরপর সেই নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হবার পর আপনার কাছে কেমন মনে হলো তাকে। নিশ্চয়ই আপনার ভেতরে এক ধরনের ভালো বা মন্দ যে কোনো একটি ধারণা তৈরি হয়েছে।

এই যে মানুষটার প্রতি আপনার যেইরকম ধারণার সৃষ্টি হলো তার উপর নির্ভর করছে আপনি পরবর্তীতে তার সাথে কেমন ধরনের Behave করবেন। অর্থাৎ Attitude এর পরপরই চলে আসে আপনার Behavior । আপনি যে চিন্তা ধারা নিয়ে রয়েছেন তার উপরে নির্ভর করে কিরকম ভাবে আপনি তার সাথে Behave করছেন। এই Behavior টি উভয়ের ক্ষেত্রেই সমান কাজ করে।

তার মানে আপনি যার সাথে দেখা করতে যাচ্ছেন বা যিনি আপনার সাথে দেখা করতে এসেছেন। তিনি আপনার সম্পর্কে কি ধারণা করছে। এই দুটো জিনিসই আপনাকে মনে রাখতে হবে। তাই আপনি যদি সর্বদা ভালো চিন্তা ভাবনা মনের মধ্যে পোষণ করেন। তাহলে আপনার কথার ডেলিভারিটাও সেরকমই হবে। আমরা অন্যদের প্রতি যখন নিজেদের পজিটিভ অ্যাটিটিউড নিজেদের মধ্যে গ্রো করব। তখনই আমাদের Behavior টি পজেটিভ হবে।

০৩। Communication skill (কারো সাথে যোগাযোগের দক্ষতা): আপনার Attitude এর উপর যেমন আপনার Behavior নির্ভর করে। তেমনি আপনার Behavior এর উপর আপনার Communication skill নির্ভর করে। এর মানে হল আপনার স্বভাব কেমন। একজন মানুষের সাথে আপনি কেমন Behave করছেন তা প্রকাশ পাবে আপনি তার সাথে কিভাবে কথা বলছেন।

ধরুন, আপনার কোন একজন মানুষকে দেখে অনেক ভালো লেগে গেল। তাই তার সাথে আপনি সুন্দর করে ভালভাবে ব্যবহার করে কথা বলচেন। কিন্তু এভাবে কথা বলার সময় একটা পর্যায়ে এমন কোন একটা বাজে শব্দ আপনি ব্যবহার করে ফেললেন। যার ফলে আপনার Attitude ও আপনার Behavior দুটোই কিন্তু নষ্ট হয়ে গেল। তাই আমরা যার সাথে কথা বলব তখন ভাষা ও শব্দ প্রয়োগের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে এবং দায়িত্বশীল হতে হবে।

ধরুন আপনি আপনার প্রিয়জনের সাথে প্রথম দেখায় সম্পর্কটা বেশ জমিয়ে তুলেছেন। কিন্তু হঠাৎ করে কথার ফাঁকে আপনি এমন কোন শব্দ বলে দিলেন যেটা আপনার মধ্যে যায় না। তাহলে কি হবে জানেন ? এইযে এতক্ষণ ধরে আপনি যে সম্পর্কটা তৈরি করে ফেলেছিলেন যে পার্সোনালিটি টা দেখাতে ছিলেন সেটার পরিবেশটা নষ্ট হয়ে যাবে।

আপনার সামনে থাকা ব্যক্তিটি তখন আপনার Attitude ও Behavior নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যাবে। এই বিষয়টি শুধু পারস্পরিক সম্পর্ক তৈরীর বেলায় নয়। সর্বক্ষেত্রেই এটা আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। আরেকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে Communication এর ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ভাষার প্রয়োগ না করে কথা বলা উচিত। কথায় আছে এক দেশের গালি আরেক দেশের বুলি।

তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারলেন আপনার Communication skill আপনার Attitude ও Behavior এর উপর কতটা নির্ভর করে থাকে। আর প্রথমবার কাউকে ইমপ্রেস করার উপায় হিসাবে এই তিনটি জিনিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

০৪। Speaking language style (বলার সময় ভাষা প্রয়োগের স্টাইল): আপনি যখন কারো সাথে কথা বলতে শুরু করবেন তার আগে আপনার কথা বলার স্টাইলে কিছুটা ভিন্নতা যোগ করলে আপনার ইম্প্রেশনটা আরো সুন্দর ও আকর্ষনীয় হয়ে উঠবে। আপনার সামনে থাকা ব্যক্তিটির সহজেই আপনার প্রতি একটা আলাদা আকর্ষণ তৈরি হতে শুরু করবে।

যেমন, কথার ফাঁকে ফাঁকে কিছু ইংরেজি ওয়ার্ডের ব্যাবহার করে বলা। অথবা বাংলা ইংরেজি মিলিয়ে কথা বলার অভ্যাস আপনাকে জানতে হবে। এক্ষেত্রে ইংরেজি শব্দের সঠিক প্রয়োগ আপনাকে জেনে নিতে হবে।

০৫। Humility in behavior (আচরণের মধ্যে নম্রতা): আপনি যখন কোন পার্টি বা চাকরির ইন্টারভিউ কিংবা আপনার প্রিয়জনের সাথে প্রথমবার দেখা করতে যাবেন তখন অবশ্যই আপনার আচরণকে সংযত ও মার্জিত রাখতে হবে। আপনার Conversation গুলি যেন Loudly না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

তারপর আপনি যদি বসে কথা বলেন বা দাঁড়িয়ে কথা বলেন সেক্ষেত্রে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যেন সেগুলো যেন দৃষ্টিকটুর না হয়। স্মার্টলি বসতে হবে। আপনার বসা বা দাঁড়ানোর মধ্যে যেন কনফিডেন্স Show করে। প্রয়োজনে আপনার রুমের ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে বসে নিজে নিজে এটার Practice করে নিতে পারেন।

কারণ Conversation শুরুর চেয়ে কিন্তু একজন অন্যজনকে ফলো করে বা তার দিকে এক নজর দেখেই কিন্তু তার প্রতি ইম্প্রেশন টা বেশী কাজ করে। কারণ আপনাকে প্রথম দেখাতেই যদি তার মনের মধ্যে কোন ফিলিংস কাজ না করে। যদি ভালো না লাগে তাহলে Conversation শুরু করাটা কিন্তু কঠিন হতে পারে আপনার জন্য। তাই ইমপ্রেস করার উপায় হিসাবে কাউকে ইমপ্রেস করতে গেলে অবশ্যই এই জিনিসগুলো আপনাকে Maintain করতে হবে।

০৬। Proper use of clothing (সঠিক পোশাক নির্বাচন): মানুষের রুচির বহিঃপ্রকাশ ঘটে তার পোশাক নির্বাচন দেখে। একটি ছেলে কিংবা একটি মেয়ে কি ধরনের পোশাকে তাকে মানাবে। আপনাকে কি রংয়ের ম্যাচিং করে পোশাক পড়তে হবে সেটা সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকলে কিন্তু আপনার ইম্প্রেশন টা শুরুতেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। দেখা গেল বেশী স্মার্টনেস দেখাতে গিয়ে আপনি যে পোশাকটি বাছাই করে পড়লেন সেটা ঐ মুহূর্তে পরিবেশের সাথে আপনার পার্সোনালিটির সাথে যায় না।

ধরুন, এখন বাইরে প্রচন্ড গরম পড়েছে। অথচ আপনি স্যুট টাই পড়ে চলে গেলেন দেখা করতে। তখন আপনি নিজেও যেমন আনইজি ফিল করবেন। তেমনি অন্য ব্যক্তিটিও আপনাকে দেখে মনে মনে বিরক্তবোধ করবে আনইজি ফিল করবে। অথবা এমন কালারের একটি পোশাক পড়লেন যেটা আপনাকে একটুও মানায়নি। তাই আপনার স্মার্টনেস কে ফুটিয়ে তুলতে পোশাকের সঠিক ব্যবহার জানা থাকা অত্যন্ত জরুরী।

এগুলোই হল আপনার ইম্প্রেশন ও কাউকে ইমপ্রেস করার উপায়। তাই কোন একটি সম্পর্ক তৈরীর ক্ষেত্রে, কারো মন জয় করতে গেলে অথবা সর্বোচ্চ আপনার পার্সোনালিটি টাকে সুন্দর করে প্রকাশ করতে চাইলে অথবা অন্যকে আকর্ষণ করতে এই ইমপ্রেস করার উপায় গুলো অবশ্যই মাথায় রাখবেন।

Leave a Comment

error: Content is protected !!